দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : শিক্ষকরা ছুটি নিয়ে দীর্ঘসময় বিদেশে থাকায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় সংকট বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
তিনি বলেন, পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনে শিক্ষকদের একটি বড় অংশ শিক্ষাছুটি নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার দেশে ফিরছেন না। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিক্ষায় বড় সংকট তৈরি হচ্ছে।
পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ইমেরিটাস এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিবের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সোমবার (১১ মার্চ) ইউজিসিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের সঠিক বাস্তবায়ন ও সদিচ্ছা প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে সংকট রয়েছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার সব ধারার সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষা, গবেষণা ও সেবা ধারায় ভাগ করা গেলে শিক্ষার গুণগত মান বাড়বে। এটি করতে হলে রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়া প্রয়োজন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় এসব শিক্ষকরা বেশি অবদান রাখতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে নানাভাবে উপকৃত হয়।
মতবিনিময় সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান, গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম, একই বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নাহিদ সুলতানা ও মো. শাহীন সিরাজ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সৈয়দ সাদ আন্দালিব বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন চিত্র, তার বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সুপারিশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে একাডেমিক বিশ্ববিদ্যালয়, রিসার্চ বেইজড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চশিক্ষা সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে।
শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা, গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তোলা, মানসম্পন্ন জার্নালে গবেষণা প্রকাশে সহায়তা করা, শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা, শিক্ষার প্রভাব যাচাই, শিক্ষকদের বেতনের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা ও সেবা প্রদানের অর্থ যুক্ত করা, তরুণ গবেষকদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ এবং ওয়েবসাইটে গবেষণার তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দেন সৈয়দ আন্দালিব।