মহান শিক্ষা দিবসে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। একইসঙ্গে শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় দরিদ্র, অসহায়, নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বই, খাতা, কলমসহ শিক্ষা উপকরণের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
রোববার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। ৬১তম মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট রংপুর নগর শাখা এই কর্মসূচি পালন করে।
সংগঠনটির মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দাসের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন মহানগরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য যুগেশ ত্রিপুরা। এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাসদ নেতা প্রভাষক অমল সরকার, বেরোবির সভাপতি রিনা মুরমু, মহানগরের সদস্য মোতায়াক্কিল বিল্লাহ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে ছাত্র ফ্রন্ট নেতারা শিক্ষা ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ-বাণিজ্যিকীকরণ-সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধ করা, নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব বন্ধ, সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ বাতিল, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়ত্ত্বশাসন প্রতিষ্ঠা ও বই, কাগজ, কলমসহ শিক্ষা উপকরণের দাম কমানো দাবি জানান।
তারা বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে যে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হলো তাতে বিজ্ঞান শিক্ষাকে সংকুচিত করে কারিগরি শিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কোমলমতি শিশুদের হাতে যে নতুন বই তুলে দেয়া হয়েছে তা খুবই নিম্নমানের এবং ভুলে ভরা। স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও শিক্ষার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা অবিলম্বে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবি করছি।
নেতারা অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম করলেও শাসকগোষ্ঠী শিক্ষাকে বাণিজ্যে পরিণত করেছে। মুনাফার শিকারে পর্যদুস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষার মান ধসে পড়েছে। শিক্ষাঙ্গনে নেই গণতান্ত্রিক পরিবেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আজ স্বায়ত্তশাসন নেই। যার ফলে একদল শিক্ষক-কর্মকর্তা দলদাস প্রশাসনে পরিণত হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বাণিজ্যিক কোর্স চালু আছে। সেখানে গবেষণা নেই বললেই চলে।
তারা আরো বলেন, দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতি সঙ্গে বই, খাতা ও কলমের দাম বেড়ে যাওয়ায় দরিদ্র, অসহায়, নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের লাখ লাখ শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে যাচ্ছে। আমরা মনে করি সেই দায় সরকারের। দেশে বহু ধারার শিক্ষা চালু থাকায় শিক্ষার্থীরা গড়ে উঠছে ভিন্ন ভিন্ন আবহে। শিক্ষা এখন রীতিমতো কেনাবেচার পণ্যে পরিণত হয়েছে। নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি ফি,সেশন ফি, বার্ষিক উন্নয়ন ফি, প্রতি শ্রেণিতে নতুন করে ভর্তি, জরিমানা ফি এরকম নানা ধরনের ফিয়ের জাঁতাকলে অভিভাবকদের নাভিশ্বাস উঠেছে। মান যাই হোক রেজাল্ট সর্বস্ব পড়াশোনার এই ধারায় শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।