আমাদের বার্তা, চট্টগ্রাম : ছয় বিষয়ের ১২টি পত্রে একজনের খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন নিয়ে অদ্ভূতুড়ে কাণ্ড চলছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে। ওই আবেদন যার নামে জমা পড়েছে তার বাবা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের শিক্ষক ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিবের ছেলে। যিনি একই বোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে ছিলেন।
কিন্তু, সচিব বা তার পরিবারের কেউ এমন আবেদন করেননি বলে দাবি করছেন। এমনকি বিষয়টি ঘাড় থেকে নামাতে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন সচিবের স্ত্রী। একই সঙ্গে এ পুনঃনিরীক্ষণ আমলে না নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন বলেও জানা গেছে। যদিও বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করেনি।
অনেকের ধারণা, সচিবের ছেলেকে বেশি নম্বর দেয়া হয়েছে, একটি পক্ষ তা জানে এবং বিষয়টি প্রমাণ করার জন্যই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে। কয়েকবছর আগে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের তোফার বিরুদ্ধে তার নিজ মেয়ের ফল জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিলো।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তাতে চট্টগ্রাম বোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে বাংলা বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পান। বাংলায় ‘এ’ পেলেও অতিরিক্ত বিষয়ের পয়েন্ট যুক্ত হওয়ায় সামগ্রিক ফলাফল জিপিএ-৫ হয়। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে গত সোমবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন বোর্ড সচিবের স্ত্রী বনশ্রী নাথ (নম্বর : ৩৩৫)। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বোর্ডের নিয়ম অনুসারে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে গেলে দেখা যায়, আমার ছেলের রোল নম্বরের বিপরীতে কে বা কারা আগেই ছয় বিষয়ের মোট ১২ পত্রের জন্য পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে রেখেছে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ১৩ পত্রের মধ্যে কয়েকটিতে সে আবেদনে আগ্রহী ছিলো। বিষয়টি অতীব সন্দেহজনক এবং দুরভিসন্ধিমূলক। এতে কোনো কুচক্রী মহলের খারাপ পরিকল্পনার ইঙ্গিত রয়েছে, যা ভবিষ্যতে তার ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কা করছি।’
শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করেছেন। তার নামে যে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা হয়েছে, তা যাতে বিবেচনায় না আনা হয়। অর্থাৎ নিরীক্ষণ করার প্রয়োজন নেই। গত সোমবার এ আবেদন চেয়ারম্যানের দপ্তরে জমা হওয়ার পর তা গতকাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন, এ ধরনের কোনো আবেদন আমার কাছে আসেনি।
সচিবের ছেলের পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন অন্য কেউ করেছে কি না, জানতে চাইলে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, পরিবারের সদস্য ছাড়া একজনের আবেদন আরেকজন কেন করবে? তবে এ বিষয়টি আমার নলেজে আসেনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের মোবাইলে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।