শিক্ষা বোর্ড কলেজ পরিদর্শকের যৎকিঞ্চিত আমলনামা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা বোর্ড কলেজ পরিদর্শকের যৎকিঞ্চিত আমলনামা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

উচ্চ মাধ্যমিক এবং বাংলা সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেছেন ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে। সেই সুবাদে বৃহত্তর ফরিদপুরে রয়েছে তার পরিচিতি। সরকারি কলেজের প্রভাষক হিসেবে তার সরকারি চাকরি শুরু। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত এই সরকারি কলেজের শিক্ষক বর্তমানে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ শাখার পরিদর্শক পদে প্রেষণে কর্মরত। তার পুরো নাম আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। আড়াই বছর আগে তিনি ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের এই পদে আসার পরপরই সাত্তার নামে এক ব্যক্তির আনাগোণা বেড়ে যায় রাজধানীর বখসিবাজারের অফিসটিতে। বখসিবাজার থেকে বৃহত্তর ফরিদপুরের শিক্ষাখাতের প্রায় সবাই জানেন এই সাত্তার হলেন কলেজ পরিদর্শকের ভাই। আর এ সুবাদে চলে তদবির বাণিজ্য। ঢাকা বোর্ডের অধীনে শিক্ষাখাতের সর্বরোগের দাওয়াই আছে সাত্তারের হাতে! সর্বশেষ পল্লীকবি জসিম উদ্দীন কলেজ নিয়েও তদবির করেছেন সেই সাত্তার। তবে, সাত্তারের ভ্রাতৃ পরিচয় প্রায় কসম খেয়ে অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন। এক প্রশ্নের জবাবে দৈনিক আমাদের বার্তার কাছে তিনি দাবি করেন, সাত্তার নামের কথিত ওই সাংবাদিককে তিনি নিষিদ্ধ করেছেন ঢাকা বোর্ডে। সবাইকে সাফ বলে দিয়েছেন সাত্তার নামে তার ভাই তো দূরের কথা, কোনো আত্মীয়ও নেই। 

 

অভিযোগ উঠেছে, বাধ্যতামূলক হলেও রাজধানীর মিরপুরের গ্রীণফিল্ড স্কুল এন্ড কলেজের নিজস্ব নামে নিষ্কন্টক জমি নেই। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কাফরুলে কিছু জমি শর্তসাপেক্ষে বরাদ্দ পেয়ে সেখানেই চলছে। কলেজটির সংরক্ষিত তহবিলের শর্ত পূরণ করা হয়নি। একাদশ শ্রেণিতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি নেওয়ার অভিযোগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তেও প্রমাণিত। কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থীও নেই। কদিন আগেও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বারবার বিজ্ঞাপন প্রচার করেও শিক্ষার্থী পাচ্ছে না কলেজটি। এমতাবস্থায় গত ২৮ আগস্ট কলেজটির নতুন পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি দিয়েছে  বোর্ড। এমন উদাহরণ আছে কয়েকডজন। এসবই কলেজ পরিদর্শকের ক্যারিশমায়। তবে, এমন অভিযোগও অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন। তার দাবি নিয়ম মেনেই সব করা হয়েছে। ২০০৪-২০০৫ খ্রিষ্টাব্দেও তিনি ঢাকাবোর্ডের উপসচিব পদে সুনামের সঙ্গে চাকরি করেছেন বলেও দাবি করেন।   

জানতে চাইলে, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, প্রতিদিন শত শত ফাইলে সই করি। ই-নথিতেও দেখি প্রচুর। একটা কলেজের স্বীকৃতি বা পরিচালনা পর্ষদের অনুমতির ফাইল চেয়ারম্যানের কাছে আসার আগে কমপক্ষে চারজন দেখেন। সর্বশেষ যখন দেখি কলেজ পরিদর্শকের সুপারিশ রয়েছে তখন সেটাই সই দিয়ে দেই। কারণ, অধস্তনদের ওপর তো বিশ্বাস রাখতে হবে। শত শত ফাইলের মধ্যে কিছু চেক করি, কোয়ারি দেই আবার তাড়াহুড়া করে কলেজ পরিদর্শকের ওপর ভরসা করে সই দিয়ে দেই কখনো সখনো। তবে, যেহেতু আপনি (সাংবাদিক) এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলেন, এখন থেকে কলেজ শাখার সবগুলো ফাইলই যাচাই করে দেখবো।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ত্রুটিপূর্ণ ও সরকারের নিয়ম না মানা কলেজগুলোর লাইব্রেরিতে পাওয়া যায় কলেজ পরিদর্শকের খামোখা কবিতার বইও! হামেশাই চলে পরিদর্শন! ভুক্তভোগী কলেজ সংশ্লিষ্টরা মৌখিক অভিযোগ জানান  শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে। কিন্তু চেয়ারম্যানের সাফ জবাব, কলেজ পরিদর্শক একজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা, তার বিরুদ্ধে এসব মৌখিক অভিযোগ আমলে নেয়ার সুযোগ নেই। তথ্যপ্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ জানালেই কেবল তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা যাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।  

উল্লেখ্য, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের সংখ্যা ২৭৭টির মতো। 

মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060391426086426