নিয়োগ, বদলি ও এমপিওভুক্তিতে ঘুষ নেওয়া ছাড়াও নিজের লেখা নোট-গাইড বই বিক্রির দোকান বানিয়েছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে। দীপু মনিকে প্রতি এমপিওর মাসে ২০ থেকে ২৫ টাকা দিতেন বিপুল। দৈনিক আমাদের বার্তা ও শিক্ষাডটকম-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো গত মার্চ ও জুলাই মাসে। শিক্ষা ভবনের সেই কোটিপতি উপপরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসকে রাজবাড়ী সরকারি কলেজে গণিত বিভাগে বদলি করা হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে, শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগবাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য ও এমপিও বাণিজ্যের হোতা বিপুলকে গ্রেফতার দাবি করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ইএফটির মাধ্যমে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও শুধু ব্যক্তিগত লাভের আশায় তা ঠেকিয়ে রেখেছেন বিপুল। এছাড়া গত চার বছর কর্মকালে বিপুল খুবই খারাপ ব্যবহার করতেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে। নিজের লেখা নোট-গাইড বই বিক্রি করতে নির্দেশ দিতেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজ অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ ‘শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঁচ শতাধিক প্রদর্শক নিয়োগে টাকার খেলা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় :
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি কলেজের জন্য দশটি বিষয়ে মোট ৫১৪ জন প্রদর্শক নিয়োগে চলছে টাকার খেলা। গত ২৭ আগস্ট প্রায় ৬০ হাজার প্রার্থী ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা দিয়েছেন। নিয়োগ কমিটির কেউ কেউ লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে থাকলেও তা হয়নি। টাকার বিনিময়ে সরকারি কলেজগুলোতে নিয়োগ পেতে যাওয়া এই প্রদর্শকরাই পরবর্তীতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত হবেন। পদোন্নতি পেয়ে তারা অধ্যাপকও হতে পারবেন। যেহেতু শিক্ষা ক্যাডারে পার্শ্বপ্রবেশের সুযোগ রয়েছে। তাই শিক্ষা ক্যাডারের সৎ কর্মকর্তারা এই এমসিকিউ পরীক্ষা বাতিল করে আইবিএর অধীনে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, প্রদর্শকরা যাতে শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত না হতে পারে পারেন সেজন্য কয়েক বছর পর এই নিয়োগবোর্ডের সভাপতিই তার জুনিয়রদের উসকে দেবেন ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি তোলার। এই প্রদর্শকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাবেন।
জানা যায়, ৫১৪ জন প্রদর্শক নিয়োগে পাঁচ সদস্যের কমিটির সভাপতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী। অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস সদস্য-সচিব। িএই নিয়োগে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন শাহেদুল খবির ও বিপুল। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলেও তদবরি করে বিপুল তা আটকে দেন। অভিযোগ রয়েছে, দুদকের তদন্তও আটকে দিয়েছেন বিপুল।
আরো পড়ুন: শিক্ষাভবন যখন কর্মকর্তার নোট-গাইড বিক্রির দোকান
একই আদেশে পদার্থ বিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহজাহানকে মাউশি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন ) করা হয়েছে। এছাড়া অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) তানভীর হাসানকে ঘিওর সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে।