শিক্ষা সংস্কারে একগুচ্ছ দাবি - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা সংস্কারে একগুচ্ছ দাবি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় সংকট মোকাবিলায় দ্রুত শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনসহ একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে সেন্টার ফর সিভিলাইজেশনাল ডায়ালগ (সিসিডি)। সংগঠনটির নেতারা বলেন, সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনায় বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষানুরাগী শিক্ষক-শিক্ষাবিদ সদস্য, দাতা সদস্যের বাইরে উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। এ ছাড়া একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে কমিটিতে আওতাভুক্ত করার তাগিদ দেন তারা। একইসঙ্গে যত্রতত্র কলেজ-মাদরাসা গড়ে উঠতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গোলটেবিল বৈঠকে এ সব দাবি তুলে ধরেন সিসিডি নেতারা।

গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ডক্টর এম নিয়াজ আব্দুল্লাহ। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর আ ন ম এহছানুল হক মিলন। সেন্টার ফর সিভিলাইজেশনাল ডায়ালগ সিসিডি প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায় ডক্টর এম এ আবদুল আজীজসহ অন্যান্য আলোচকরা।

এ সময় বক্তারা বলেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও উন্নত জাতি গঠন এখন সময়ের দাবি। তাই শিক্ষা ব্যবস্থা, সংবিধান, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, দুর্নীতি দমনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও উন্নত জাতি গঠনে যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়া উচিত। 

গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তারা বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে এমন যেখানে তরুণসমাজ বিশেষ গুরুত্ব পাবে, নবীন প্রজন্মের চিন্তা ও মত গুরুত্ব পাবে, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বাথই অগ্রাধিকার পাবে, মানুষের ভোটাধিকার থাকবে, বাকস্বাধীনতা থাকবে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশে থাকবে না- দুর্নীতি, বেকারত্ব, নোংরা রাজনীতি, জনগণের টাকা ও সম্পদ লুটপাট, অর্থপাচার। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন থাকবে, বহিবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জল হবে, উন্নতি-অগ্রগতির পথে উত্তরোত্তর এগিয়ে যাবে। সামাজিক সম্প্রীতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত হবে।

শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রে যেসব দাবি সিসিডির, সেগুলোর অন্যতম হলো- জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে শিক্ষাদর্শন, ভিশন, মিশন, এবং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। দেশীয় স্বত্ত্বা ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র বিনির্মাণে, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন, দক্ষ এবং ভালো মানুষ গড়ে তোলাই প্রাধান্য পাওয়া উচিৎ জাতীয় শিক্ষার লক্ষ ও উদ্দেশে।

১ম- ৪র্থ আন্তজাতিক মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনে গৃহীত (১৯৭৭-১৯৮৩) মক্কা ডিক্লেয়ারেশনে বাংলাদেশ একটি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে গৃহীত সুপারিশসগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে যা- পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই, পরবর্তী শিক্ষা সংস্কার কমিশন অবশ্যই সেই ডিক্লেয়ারেশনে গৃহীত সুপারিশমালার বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিবে।

শিক্ষায় যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শহর-গ্রামীণ ভেদাভেদ দূর করে ভারসাম্যপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিশেষভাবে বিবেচনায় নিয়ে, তাদের জন্য শিক্ষা বাজেটে অগ্রাধিকার নীতি চালু করতে হবে।

বিগত বছরগুলোতে উচ্চশিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বিধায় উচ্চশিক্ষার মান ধরে রাখার জন্য সংখ্যা না বাড়িয়ে গুণগত মানের দিকে নজর দেয়া উচিত। এ লক্ষ্যে ঢাকা ও জেলার পরিবর্তে বিভাগীয় শহরে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন/আনুমোদন দেয়া যেতে পারে। 

দেশের শ্রম বাজার এবং বিশ্বশ্রমবাজারে জনশক্তি রপ্তানির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ডিপ্লোমা চালু করা উচিত, যাতে করে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা যায়। এ ছাড়া কারিগরি ধানায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার জন্য কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্প্রসারণ, গবেষণা কার্যক্রম এবং শিক্ষা মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ লক্ষ্যে জেলাভিত্তিক প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কারিগরি শিক্ষার বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা উচিত।

বাংলাদেশ প্রধানত কৃষিনির্ভর দেশ। তাই, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি উন্নত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাপক ভিত্তিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সব স্তরে শিক্ষকদের বাজনীতি সম্পৃক্ততা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ও লেজুরভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা।

সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনায় বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষানুরাগী শিক্ষক-শিক্ষাবিদ সদস্য, দাতা সদস্যের বাহিরে উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। এ ছাড়া একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে কমিটিতে আওতাভুক্ত করা উচিত।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা যাতে যত্রতত্র কলেজ-মাদরাসা গড়ে উঠতে না পারে এবং দক্ষ গ্র্যাজুয়েট বের হতে পারে।

জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় সংকট মোকাবিলায় দ্রুত শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন, পরবর্তীতে শিক্ষা কমিশন গঠন অথবা জাতীয় করতে হবে। যেখানে শিক্ষানীতি, শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব, দেশের শিল্প এবং শ্রমবাজারের সাথে পরিচিত ব্যক্তিত্ব এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি - dainik shiksha এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন - dainik shiksha কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি - dainik shiksha ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003777027130127