বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) টিউশন ফি নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালায় যেকোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একক খাতে বাৎসরিক আদায় ১০ লাখ টাকার বেশি হলে এই খাতের জন্য আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে বলে জানানো হয়েছে। এর আগে দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকম এই নীতিমালার খসড়া থেকে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো। সেই খসড়াই এবার চূড়ান্ত করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত রোববার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ নীতিমালার পরিপত্র জারি করে।
পরিপত্রে বলা হয়, এই নীতিমালা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল, স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক স্তর) এর টিউশন ফি নীতিমালা- ২০২৪ নামে অভিহিত হবে। নীতিমালা জারির তারিখ থেকে এটি কার্যকর হবে। সিটি কর্পোরেশন, মহানগর, অন্যান্য এলাকা (যথা- জেলা সদর, পৌর এলাকা, উপজেলা) তার আওতাধীন এলাকার জন্য টিউশন ফি নির্ধারণ করবে।
আরো পড়ুন: মফস্বলের স্কুল-কলেজে যে হারে বেতন ও বার্ষিক ফি
নীতিমালায় কমিটি সর্ম্পকে বলা হয়েছে, মহানগর কমিটিতে সভাপতি হিসেবে থাকবেন— অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শিক্ষা ও আইসিটি-সার্বিক এবং সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন, আঞ্চলিক উপপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। সদস্য জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, শিক্ষা বোর্ড মনোনীত এমপিওভুক্ত কলেজের একজন অধ্যক্ষ, নন-এমপিও কলেজের একজন অধ্যক্ষ, এমপিওভুক্ত স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক, নন-এমপিও স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা-থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলা সদর পৌর এলাকার ও উপজেলার কমিটিতে সভাপতি থাকবেন— জেলা প্রশাসক, সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। সদস্য হিসেবে থাকবেন উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক মনোনীত এমপিওভুক্ত কলেজের একজন অধ্যক্ষ, পৌরসভা পর্যায়ে নন-এমপিও কলেজের একজন অধ্যক্ষ, উপজেলা পর্যায়ে এমপিওভুক্ত স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা পর্যায়ে নন-এমপিও স্কুলের একজন প্ৰধান শিক্ষক ও উপজেলা-থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
আরো পড়ুন: পৌর এলাকার স্কুল-কলেজে যে হারে বেতন ও বার্ষিক ফি
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অক্টোবর মাসের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিনিধি নির্বাচন করে কমিটির সভাপতিকে অবহিত করবে।
কমিটির কর্মপরিধি সম্র্পকে বলা হয়েছে—কমিটি আওতাভুক্ত এলাকার এমপিও-নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাসিক বেতন-টিউশন ফি নির্ধারণ করবে। প্রতি বছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রতিষ্ঠানভিত্তিক টিউশন ফি-মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। দরিদ্র অসহায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফুল ফি-হাফ ফি’র ব্যবস্থা করবে। নির্ধারিত মাসিক বেতন-টিউশন ফি আদায়ের বিষয় জেলা শিক্ষা অফিসার-উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মনিটর করবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করবে। সদস্য সচিব টিউশন ফি নির্ধারণের খসড়া প্রস্তাব কমিটির সভায় উপস্থাপিত হবে। কমিটির সভায় গৃহীত চূড়ান্ত প্রস্তাব কমিটির সব সদস্য স্বাক্ষরিত হবে।
আরো পড়ুন: মহানগরীর স্কুল-কলেজে যে হারে বেতন ও বার্ষিক ফি
এ ছাড়াও নীতিমালায় বলা হয়েছে নির্ধারিত বেতন বা টিউশন ফি সংক্রান্ত তথ্য আবশ্যিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শন করতে হবে। কমিটির সদস্য সচিব বেতন-টিউশন ফি বিবরণী প্রস্তুত করতে হবে। মহানগর ও জেলা কমিটি নির্ধারিত মাসিক বেতন-টিউশন ফি এবং সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।
মাসিক বেতন-টিউশন ফি এবং তফসিলে বর্ণিত খাতে আদায়কৃত অর্থ তফসিলি ব্যাংকে নির্দিষ্ট হিসাবে রাখতে হবে। কোনো একক খাতে বাৎসরিক আদায় ১০ লাখ টাকার অধিক হলে এ খাতের জন্য আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। আদায় করা অর্থ আবশ্যিকভাবে খাতভিত্তিক ব্যয় করতে হবে এবং এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না। সব আয় ও ব্যয় ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।