মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনরত শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক আজ বিকেল সাড়ে তিনটায়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন শিক্ষামন্ত্রী।
বুধবার (১৯ জুলাই) দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ।
আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই অধিদপ্তর থেকে কড়া নির্দেশ জারি করলেও জাতীয়করণের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’
দুপুর ১টা ২০মিনিট পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সারাদেশ থেকে আসা শিক্ষকরা অবস্থান নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য দিয়ে চলছেন।
গতকাল জারি করা আদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন। এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার প্রধান, শিক্ষক-কর্মচারীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে পৃথক আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। একই সঙ্গে স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কোনো প্রচারণায় অংশ না নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর মাদরাসা শিক্ষকদের ‘আন্দোলনের নামে’ উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এসব নির্দেশনা দিয়ে মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আদেশ ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বা গভর্নিং বডি। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কোনো কোনো শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ করছেন।
পাশাপাশি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডিরও কোনো নজরদারি না থাকায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের অনিয়মিত উপস্থিতি করোনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস নেয়া বাধাগ্রস্থ হচ্ছে ও শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ক্ষুণ্ন করছে। তাই চার নির্দেশনা দিয়েছে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর বলছে, স্কুল-কলেজের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি সক্রিয় তদারকি করবে। শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান কার্যকর ভূমিকা নেবেন। করোনা অতিমারীর কারণে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে গৃহীত বিশেষ ব্যবস্থা কার্যকর রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে কোনো মিথ্যা ও উসকানিমূলক প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
এদিকে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন দাখিল, আলিম, ফাজিল, কামিল পর্যায়ের মাদরাসার কতিপয় শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান না করে কর্মস্থলের বাইরে অবস্থান করছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে তাদের ব্যক্তিগত ওয়ালে ও বিভিন্ন গ্রুপে আন্দোলনের নামে কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে অশোভন, অনৈতিক, শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মাদরাসায় শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ এর ১০ (ঙ) ও ১০ (ছ) এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এর ১৮ (গ) অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। মাদরাসায় কর্মরত সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে এ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।