সাবিহা সুমি, দৈনিক শিক্ষাডটকম: ডক্টরেট ডিগ্রিধারী জার্মান নাগরিকদের পাসপোর্টে নামের আগে ডক্টর উপাধি বসানো বন্ধ হচ্ছে। আগামী ১ মে থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে। ওই দিন থেকে দেশটির আর কোনো নাগরিককে পাসপোর্টে নামের সঙ্গে ডক্টরেট ডিগ্রি লেখার অনুমতি দেয়া হবে না। যোগ্যতার অহমে আচ্ছন্ন জার্মানদের জন্য এই সিদ্ধান্ত বেশ অস্বাভাবিক বলে মনে করেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ইকনোমিস্ট এর মতে, জার্মানিতে শিক্ষার মানের নিম্নগতির কারণেই এমন বিধান। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসেসমেন্ট (পিসা) প্রতি তিন বছর পরপর প্রায় ৮০টি দেশে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে পঠন, গণন ও বিজ্ঞানের যোগ্যতা পরিমাপ করে। গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত সাম্প্রতিকতম পিসা মূল্যায়নে দেখা গেছে, তিনটি বিষয়েই জার্মান শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার পতন গত এক দশক ধরে তীব্র।
আইজিএলইউ নামে পরিচিত ৬৫টি দেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পঠন দক্ষতার ওপর পরিচালিত আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ জার্মান শিক্ষার্থীর পর্যাপ্ত পঠন দক্ষতা ছিলো না। পাঁচ বছর আগে এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে ছিলো মাত্র ১৭ শতাংশ।
জার্মান রাজ্যগুলোর মধ্যে ফলাফলের তুলনা করে এমন একটি শিক্ষা-গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউবি পরিচালিত নবম-শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে জার্মান ভাষার দক্ষতার সর্বশেষ সমীক্ষায় দেখা গেছে, পঠন, শ্রবণ ও বানানের ন্যূনতম মানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়া শিক্ষার্থীর হার ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে যথাক্রমে ৯, ১৬ ও ৯ শতাংশ বেড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে খোদ জার্মানিতেই বলা হচ্ছে, এই ব্যর্থতা বিপর্যয়ের কাছাকাছি। যদিও জার্মানির শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও বিশ্বের সেরাদের মধ্যে রয়েছে। এখানকার বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সুযোগও বিশ্বসেরা। মানের পতনের মধ্যেও জার্মান স্কুলগুলো ইউরোপীয় মানের মধ্যম র্যাঙ্কে পারফর্ম করে, যদিও তাদের অবস্থান প্রতিবেশি অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও সুইজারল্যান্ডের নিচে।
শিক্ষার মান নিয়ে হুঁশিয়ারিও দেশটিতে নতুন নয়। নতুন সহস্রাব্দের সূচনায় জার্মান স্কুলগুলো প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মূল্যায়নের মুখোমুখি হয়ে হতাশা উপহার দেয়। এই ফলাফল জার্মানদের এতোটাই অবাক করেছিল যে, স্কুলগুলো পিসা-শক নামে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করতে বাধ্য হয়েছিল।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।