বৃষ্টিভেজা সকাল। প্রচণ্ড ঝড় আর বজ্রপাত। স্কুলে তালা। সময় দুপুর ১২টা। শিক্ষার্থী ভিজছে স্কুল গেটে। আসেননি কোনো শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকও আসেননি। মোবাইল তার বন্ধ। এটি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র। বৃষ্টিতে ভিজে বিদ্যালয়ে এসে বাড়িতে ফিরে গেলেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বেলা ১২টায় শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এ ঘটনার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন। এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা জানান, প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও সকাল সাড়ে ৯টায় কালীগঞ্জ শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ?্যালয় যান তারা। এ সময় একে একে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এলেও শিক্ষক আসেননি। তালা বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের বারান্দায় প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে তারা দাঁডিয়ে থাকে। পরে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুপতি মোহনকে ফোন দেন। পরে দেখতে পান প্রধান শিক্ষকের মোবাইলটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
এভাবেই টানা তিন ঘণ্টার বেশি শিক্ষার্থীরা ক্লাস রুমে না ঢুকে কেউ ছাতা মাথায় কেউ বারান্দায় অপেক্ষা করেন। পরে উপায় না পেয়ে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে ভিজে বেলা ১২টায় তারা বাড়িতে ফিরে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, প্রতিদিন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক আসেন অনেক দেরিতে। এভাবে বিদ্যালয় কখনোই চলতে পারে না। যারা বিদ্যালয়ে দেখার দায়িত্বে আছেন তাদের অবশ্যই দেখার অনুরোধ করছি। না হলে শিক্ষার্থীদের জীবন একদিন নষ্ট হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা আর কখনোই এই বিদ্যালয়ে আসতে চাইবে না। এ বিষয়ে শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুপতি মোহনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রণবীর কুমার এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ নির্ধারিত সময় পার হলেও বিদ্যালয়ে আসেননি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় বলেন, খোঁজ নিয়েছি, তারা কেন বিদ্যালয় আসেননি। এজন্য চিঠি পাঠিয়ে জবাব চাওয়া হবে। এ ছাড়াও আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।