শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলবিরোধী প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরে সরব অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। এই প্রতিবাদের জেরে হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলের পক্ষ-বিপক্ষের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে ইহুদিবিদ্বেষ-বিরোধী একটি বিল পাস হয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার থাকা সংগঠনগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও গতকাল বুধবার বিলটি পাস হয়। এটি এখন অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হবে।

সিএনএন বলছে, প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩২০ জন সদস্য। আর বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯১ জন। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ চলছে, তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিলটি পাস করা হয়েছে।

সিনেটে পাস হওয়ার পর বিলটি যদি আইনে পরিণত হয়, তবে এর মধ্য দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল হলোকস্ট রিমেমব্র্যান্স অ্যালায়েন্সের (আইএইচআরএ) দেওয়া ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞাকে বিধিবদ্ধ করা হবে। আইএইচআরএর সংজ্ঞাকে আইনে যুক্ত করা হলে ইহুদিবিদ্বেষের চর্চা হওয়ার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তহবিল বন্ধ করে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ।

সমালোচকরা বলছেন, আইএইচআরএর ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করা হতে পারে।

আইএইচআরএর সংজ্ঞা অনুযায়ী, ইহুদিবিদ্বেষ হলো ইহুদিদের নিয়ে একটি নির্দিষ্ট ধারণা, যা ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে ব্যবহার করা হতে পারে।

আইএইচআরএর সংজ্ঞা অনুযায়ী, ইসরায়েল রাষ্ট্রকে আক্রমণ করে কিছু বলাকেও ইহুদিবিদ্বেষ হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, ইসরায়েলকে ইহুদিদের সম্মিলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এদিকে ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসন এবং ওয়াশিংটনের অন্য কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে অবিচল সমর্থন জুগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট সদস্যরাও বিক্ষোভ থামাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। তাদের দাবি, এসব বিক্ষোভ ইহুদিবিদ্বেষী।

অবশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বিক্ষোভের নেতারা সেই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইসরায়েলের ভেতরে বা দেশটির প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করছে এমন মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের সহকর্মী। আর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করছে।

স্নাতক অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েক দিন আগে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীদের তাঁবুর অস্থায়ী শিবিরগুলো অপসারণে হিমশিম খাচ্ছে। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের মূলত দাবি, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্র্তৃপক্ষ যেন ইসরায়েলকে সরবরাহ করা অস্ত্রের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ না করে এবং তাদের কাছ থেকে কোনো তহবিল বা সুবিধা না নেয়। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘গণহত্যা থেকে বিচ্ছিন্ন’ থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইসরায়েলের ভেতরে বা দেশটির প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করছে এমন মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের সহকর্মী। আর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করছে। [iside-ad]

এর মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গত মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাঁবুর শিবিরগুলো অপসারণ ও একটি অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে তাদের হটিয়ে দেয় পুলিশ। ভবনটি দখল করে রেখেছিলেন তারা।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার আগে দোতলার হ্যামিলটন হলে প্রবেশ করেন দাঙ্গা পুলিশের সদস্যরা। ওইদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১৯ জনের মতো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গত বুধবার জানিয়েছেন নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা জন চেল।

এদিকে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসে মঙ্গলবার রাতে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় একদল ইসরায়েল-সমর্থক। এ সময় উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

দুপক্ষের সংঘর্ষের সময় ইসরায়েল-সমর্থকরা বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠি ও ব্যাট নিয়ে চড়াও হন। শিবিরের প্রতিবন্ধকতাগুলো ছিন্ন করার চেষ্টা চালান তারা। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সহিংসতার সময় পুলিশ ধীরে সাড়া দিয়েছে। সহিংস ঘটনার জেরে গতকাল ক্লাসগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন ইউসিএলএ কর্মকর্তারা।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও তাঁবুর অস্থায়ী শিবির গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ জুগিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কয়েকটি জর্জ ওয়াশিংটন, ব্রাউন, ইয়েল, হার্ভার্ড, এমারসন, এনওয়াইইউ, জর্জটাউন, আমেরিকান, ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড, জনস হপকিন্স, টাফটস, কর্নেল, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া, প্রিন্সটন, টেম্পল, নর্থইস্টার্ন, এমআইটি, দ্য নিউ স্কুল, ইউনিভার্সিটি অব রোচেস্টার ও ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ।

এ ছাড়া আছে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিক, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেস, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন, ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন, নর্থ ওয়েস্টার্ন, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি সেন্ট লুইস, ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ওহাইও স্টেট, ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা, মায়ামি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওহাইও, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো, এমোরি, ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা, ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া এথেন্স ও ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস।

ক্যাম্পাসের ফিলিস্তিনপন্থি গ্রুপগুলো অনেক বছর ধরে তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি ইসরায়েলকে বয়কট করা, দেশটির প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ না করা ও নিষেধাজ্ঞার (বিডিএস) পদক্ষেপে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এর উদ্দেশ্য ইসরায়েলকে তার তৎপরতা থেকে পিছু হটানো। নিষেধাজ্ঞার আহ্বানে এখন পর্যন্ত কোনো মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় সাড়া দেয়নি। তবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অতীতে ইসরায়েলের সঙ্গে নির্দিষ্ট খাতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062060356140137