নীলফামারীর জলঢাকায় শিক্ষার্থী শূন্য অবস্থায় চলছে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের দেয়া অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রায় এক মাস যাবত ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পাঠাচ্ছেন না তারা। ঘটনাটি উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরেজমিনে রোববার সকালে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থী নেই। শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়ে বসে রয়েছেন ওই স্কুলে কর্মরত ৫জন শিক্ষক।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে প্রাক প্রাথমিকে ১৮ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৯ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৮ জন,তৃতীয় শ্রেণিতে ১০ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৩ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১৭ জনসহ মোট ৯৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে রোববার একজন শিক্ষার্থীও স্কুলে আসেননি। এছাড়াও গত ২২ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ২য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরিক্ষায় ৯ দিনে শুধুমাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।
এর আগে গত ৯ আগস্ট প্রধান শিক্ষক মোন্তাকেম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদের অন্যত্রে বদলির দাবিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিভাবকদের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়নি। পরে প্রধান শিক্ষক মোন্তাকেম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসির অন্যত্রে বদলির দাবিতে গত ১৬ আগস্ট সকালে বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না পাঠানোর বিষয়ে কয়েকজন অভিাভাবকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলে দেরিতে আসেন সে কারণে ঠিকমত লেখাপড়া হয় না, তাই প্রধান শিক্ষকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবো না।
সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোন্তাকেম চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যেসব শিক্ষার্থী দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি পরবর্তীতে তাদের পরীক্ষা নেয়া হবে। কেউ শিক্ষার্থীদের আসতে বাধা দেয়ায় প্রায় ১ মাস যাবত স্কুলে শিক্ষার্থী কম আসছে।
ওই ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার শরিফা আকতার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অতিদ্রুত তদন্ত রিপোর্ট জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।