শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যৌনশিক্ষা প্রদানে দ্বিমত - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যৌনশিক্ষা প্রদানে দ্বিমত

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় শিক্ষাখাতে পরিবর্তন ও জনসংখ্যার দক্ষতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ছাড়াই সিপিডি-৫৬ সম্মেলনের সম্মাপ্তি টানা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের আয়োজনে জনসংখ্যা ও টেকসই উন্নয়নবিষয়ক পাঁচ দিনব্যাপী সিপিডি সম্মেলন আয়োজন করা হলেও এবারও অর্থহীন বলে উল্লেখ করেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। নিউইয়র্ক সময় শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে এ সম্মেলন শেষ হয়। 

প্রতি বছর জাতিসংঘের আয়োজনে বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু নিয়ে সিপিডি সম্মেলন আয়োজন করা হয়ে থাকে। আগামী ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে (এসডিজি) এবার জনসংখ্যা, শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়। গত পাঁচ দিনব্যাপী নানা প্রস্তাব নিয়ে বির্তকের পর দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে সমন্বিত যৌনশিক্ষা প্রদানে শিক্ষাক্রমে যুক্ত করা ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ভূমিকা বৃদ্ধি। এ দুই প্রস্তাবে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলো একমত না হওয়ায় কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন ছাড়াই শেষ হয়।

সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসডিজি বাস্তবায়নে সমন্বিত যৌনশিক্ষা বাস্তবায়ন করতে চায় না দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অনেক মুসলিম দেশ। তার সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশে অনেক অভিভাবক নিরক্ষর ও আর্থিক অস্বচ্ছল। সেখানে শিক্ষা ব্যয় আরও বৃদ্ধি ও পাঠদানের একটি বড় ভূমিকা অভিভাবকদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রস্তাব কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলে ধরেন। সেটি উন্নত দেশের পক্ষে সম্ভব হলেও উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে এসব প্রস্তাবে আপত্তি জানানো হয়। সে কারণে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই সিপিডি-৫৬ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন কমিশনের চেয়ারম্যান। 

জাতিসংঘের বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি মো. আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের জনসংখ্যা ও শিক্ষা ব্যবস্থা তুলে ধরেন। বর্তমান সরকারের গত বছরে শিক্ষার পরিবর্তন, উন্নয়ন ও তার গুরুত্বের বিষয় তুলে ধরা হয়। চার মিনিট সময় জুড়ে তিনি এ প্রতিবেদন পাঠ করেন।

আব্দুল মুহিত বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। কোনো ধরনের বির্তকের মধ্যে আমরা যাইনি। কেউ কেউ নিজেদের মতো বির্তক সৃষ্টি করছে। তার মধ্যে মিশর অন্যতম। উত্তর আফ্রিকার মুসলিম বেশ কয়েকটি দেশ মিশরের সঙ্গে সম্মতি জানিয়েছে।’

তিনি বলেন, আরব ও আফ্রিকান ২২টি দেশের প্রতিনিধিরা শিক্ষা ব্যবস্থায় সমন্বিত যৌনশিক্ষা পাঠদান বাস্তবায়ন ও অভিভাবকদের আরও ভূমিকা বৃদ্ধির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। সে কারণে একটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। গত বছরের মতো সিপিডি-৫৬ সম্মেলনে কোনো সুনির্দিষ্ট সমাধান ছাড়া শেষ হয়েছে। যেহেতু কমিশন ভোটের মাধ্যমে কোনো কিছু বাস্তবায়নের পক্ষে ছিল না সে কারণে সেদিকে যাওয়ার প্রস্তাব তোলা হয়নি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের সমন্বিত যৌনশিক্ষা প্রদান বিষয়ে ক্লাসে পাঠদান দেওয়া সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি, এটি সরকারের সিদ্ধান্ত বলে জানান। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যে উন্নত হচ্ছে আমরা সেটিকে ফোকাস করেছি। এর মাধ্যমে দাতা সংস্থার সহায়তা ও বিনিয়োগ অব্যাহত থাকে সেটি আমাদের মূল লক্ষ্যমাত্রা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে কমিশনের সপ্তম সভায় কোভিড-১৯ মহামারির পরে উন্নত দেশগুলো শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া ক্ষতি পূরণ করতে সক্ষম হলেও উন্নয়ন ও অনুন্নত দেশগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে পড়ছে। এসব দেশে শিক্ষার ব্যয় আগের চাইতে কমে গেছে। সে কারণে আগামী ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এসব দেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে অনেকে ব্যর্থ হবে বলে দাবি তোলেন বিশেষজ্ঞরা।

পাশাপাশি উন্নয়শীল ও অনুন্নত দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করে শিক্ষা ব্যয় কমানো, জীবনমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি, যুব ও জনগোষ্ঠির মাঝে যৌন ও প্রজনন খাতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সঠিক শিক্ষা এবং ডিজিটাল দক্ষতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্মেলনের উদ্বোধনে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ১০টি গবেষণা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে মলদোভা প্রজাতন্ত্রের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং চেয়ারম্যান জর্জ লিউকা, জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল মিসেস আমিনা জে মোহাম্মদসহ জাতিসংঘের সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিবেশ এখনও হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিবেশ এখনও হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে : সেনাপ্রধান - dainik shiksha দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে : সেনাপ্রধান তিন-চার দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী - dainik shiksha তিন-চার দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেসবুক-টিকটক আপাতত বন্ধ থাকছে - dainik shiksha ফেসবুক-টিকটক আপাতত বন্ধ থাকছে পিএসসির সব পরীক্ষা ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত - dainik shiksha পিএসসির সব পরীক্ষা ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সবার কাছে নাশকতার ছবি-ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়েছে পুলিশ - dainik shiksha সবার কাছে নাশকতার ছবি-ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়েছে পুলিশ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027921199798584