দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে সফট স্কিলে দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ভাষা ছাড়াও অনেক সফট স্কিল রয়েছে। এসব স্কিলের দিক থেকেও যদি পিছিয়ে থাকি তাহলে শুধুমাত্র গ্র্যাজুয়েট হয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা আমাদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭ম সমাবর্তনে যোগ দিয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে তার প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে অংশ নেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্বের যেসব ভাষা বহুল প্রচলিত সেসব ভাষায় শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষ হয়ে উঠে, সে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব প্রচলিত এসব ভাষায় শিক্ষার্থীরা দক্ষ না হলে কর্মসংস্থানের দিক থেকে পিছিয়ে যাওয়া হবে স্বাভাবিক।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭ম সমাবর্তনে ৩ হাজার ৯৫৪ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য আরও চারজন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।
গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্বে এখন দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মীর চাহিদা বেড়েছে। সমগ্র বিশ্বের শ্রম বাজার আমাদের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিবেশী দেশগুলোতে যদি দেখি, সেসব দেশে আরবি-ফরাসি ভাষা শিখে বিশ্ব নাগরিক হওয়ার জন্য তাদের তরুণ প্রজন্ম সারাবিশ্বে জড়িয়ে পড়েছে। আমাদেরকেও এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। এ জন্য যেভাবে দক্ষ ও যোগ্য হওয়া যায়, শিক্ষার্থীদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে।’
এ সময় মানসম্পন্ন-দক্ষ কর্মীর অভাবে বিদেশি পেশাজীবীরা এদেশে এসে শ্রমবাজার দখল করছে বলে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, পৃথিবীর নানান দেশ থেকে প্রশিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীরা আমাদের দেশে এসে কাজ করছেন। আপনারা কেন বিদেশি পেশাজীবীদের এ জায়গা দখল করতে পারবেন না? যারা ইতোমধ্যেই গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বিনীত নিবেদন থাকবে—ক্যারিয়ার প্ল্যানিংটা আপনারা অবশ্যই করবেন।
তিনি বলেন, যেসব খাতে বিদেশি পেশাজীবীরা কর্মরত আছেন—সে সবখাত গুলোতে আপনারা দেখবেন, এসব পেশাজীবীরা সুনির্দিষ্ট কিছু দক্ষতার কারণে এদেশে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। যারা কর্মদাতা, তারা কিন্তু শুধুমাত্র গ্র্যাজুয়েট বলে কাউকে চাকরি দেন না।
‘তারা দেখতে চান—তাদের যে ধরনের প্রয়োজনীয় শিক্ষা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন, সেটা প্রার্থীর আছে কিনা। চাকরি দাতাদের এখানে বক্তব্য হচ্ছে, আমাদের সন্তানদের অনেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেও প্রয়োজনীয় দক্ষতায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। আমরা অনুরোধ করবো, আপনারা সেসব ঘাটতিগুলো পূরণে কাজ করবেন।’
ইউআইইউর সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভাসিটির অধ্যাপক ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা এবং ইউআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া।