তাইওয়ানে চলতি মাস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ছুটি কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। সম্প্রতি মানসিক চাপ ও বিষণ্নতায় ভুগতে থাকা শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। এর আওতায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিটি সেমিস্টারে পূর্ণ বা অর্ধদিন হিসাবে মোট তিন দিনের ছুটির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, এই বিশেষ ছুটির জন্য কোনো প্রমাণের প্রয়োজন হবে না। অভিভাবকের অনুমতিই নিলেই হবে। ৪০ এরও বেশি বিদ্যালয় এই পরীক্ষামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে খ্যাতনামা সংবাদমাধ্যম দি অবজারভার।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাইওয়ানের জাতীয় সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং ও স্বাস্থ্য ইউনিটের একজন মনোবিজ্ঞানী হসিয়াও চিহ-হসিয়েন বলেন,
মানসিক স্বাস্থ্য ছুটির নির্দিষ্ট কার্যকারিতা রয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের জরুরি চাপ থেকে মুক্তি পেতে এবং অস্বস্তি হজম করতে পর্যাপ্ত বিশ্রামের সময় দেয়। যদি মানসিক অস্বস্তিকে স্বাভাবিকভাবে দেখা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা সাহায্য চাইতে আরো সাহসী হবে।
তবে সরকারের এই উদ্যোগ সরকার বিরোধীদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষার চাপ কমিয়ে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমানোর পক্ষে সওয়াল করছেন।
দেশটির স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের আত্মহত্যা বৃদ্ধিকে ‘তাইওয়ানে উঁচু ভবনের সংখ্যা বৃদ্ধি’ এর সাথে তুলনা করার পর থেকে কঠোর সমালোচনা শুরু হয়।
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার লীগ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি জরিপ পরিচালনা করে। তাতে দেখা যায়, ১২ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী ‘গুরুতর’ মাত্রার মানসিক চাপ অনুভব করেন। এই হার জুনিয়রদের তুলনায় হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি। প্রায় এক-চতুর্থাংশ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা মারাত্মক বিষন্নতা অনুভব করছেন।
ওই জরিপে আরো দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৭ শতাংশ স্কুলের কাজজনিত কারণে মানসিক অবসাদে ভোগেন। ভবিষ্যত নিয়ে ভাবনা ও পারস্পরিক সম্পর্কও তাদের অবসাদে ভোগার অন্যতম কারণ।
উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, আমি সহজেই আমার জুনিয়র হাইস্কুলে ক্লাসে শীর্ষ তিন গ্রেডের মধ্যে থাকতে পারতাম, কিন্তু এখন আমার গ্রেড এতোটা ভালো নয়।
তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্ক এবং নিজের চেহারাকেও উদ্বেগের উৎস হিসাবে উল্লেখ করেন।
ওই ছাত্রী আরো বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব কিনা সে সম্পর্কে চিন্তা শুরু করেছি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।