রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্জিত ‘স্বাধীনতা’র পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের তিনমাস অতিবাহিত হলো। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জাদুর কোনো চেরাগ নেই যা দিয়ে তিনি দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের মতো দিনকে রাত আর রাতকে দিন করার প্রতিশ্রুতি দেবেন আর তা ভঙ্গ করবেন। তবে, তাঁর রয়েছে আন্তর্জাতিক বিশাল পরিচিতি, বিশ্ব অর্থনীতি সম্পর্কে ধারণা, স্বচ্ছতা আর মানুষের ভালোবাসা। দেশের সাধারণ মানুষ প্র্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির খতিয়ান দিয়ে সাধারণত সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতার হিসেব করে থাকে। কীভাবে এ সরকার এলো, তাদের প্রায়োরিটি ওয়াইজ কাজ কী কী সেসব চিন্তা না করে আমরা সবাই লেগে গেলাম শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে। এই সরকার তা করতে না পারলে শিক্ষাবান্ধব নয়।
পতিত সরকার চব্বিশ ঘণ্টাই রেকর্ড বাজাতো নিজেদের ‘শিক্ষাবান্ধব’ সরকার বলে। শিক্ষক নেতৃবৃন্দসহ অনেকেই মুখে ফেনা তুলে ফেলতেন সরকারের শিক্ষায় অবদানের কথা বলে বলে। তারা কেনো জাতীয়করণ করেনি? তাদের অর্থের অভাব ছিলো না, একেক জন পাতি নেতাও যে পরিমাণ টাকা মেরেছেন তা দিয়ে আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে তো অন্তত জাতীয়করণ করা যেতো। তারা তা করেনি, অথচ ভঙ্গুর আর্থনীতি, ভেঙ্গে পড়া প্রশাসন, চরম বিশৃঙ্খল আইনশৃঙ্খলা পারিস্থিতি ও বাহিনী, বাজার সিন্ডিকেটের ওপর দাঁড়িয়ে এই সরকারকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তার মধ্যে একটির পর একটি দাবি নিয়ে সব ধরনের পেশাদারি ও অপেশাদার সংগঠনগুলো প্রতিদিন রাস্তায় নামছে, রাস্তা অবরোধ করছে তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে। এর মধ্যে অনেক দাবিই অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে পূরণ করা করা সম্ভব নয়, জেনেও তারা রাজপথ ছাড়ছে না, আন্দোলন করছে। জাতীয় বড় কোনো সিদ্ধান্ত সংসদে পাস করতে হয়। বর্তমান সরকার যদি ঘোষণা দিয়ে দেয় এবং পবরর্তী নির্বাচিত সরকার যদি এসে তা বাতিল করে দেয় তাহলে? কাজেই ঘোষণা দিলেই হবে না, তার যুক্তি, সম্ভাব্যতা, স্থায়িত্ব থাকতে হবে।
প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত আপাদমস্তক চরম দুর্নীতিতে ভরা। বছরের পর বছর চলে এসেছে সিন্ডিকেট বাণিজ্য। কোথায় শিক্ষা আর কোথায় মানসম্মত শিক্ষা--এ নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা ছিলো না পতিত সরকারের। তাদের ধান্দা ছিলো পুরো আলাদা যা শিক্ষা সচেতন সবাই প্রত্যক্ষ করেছেন এবং এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মাশুল আমরা দিয়ে চলেছি। এই কঠিন পরিস্থিতিকে সামাল দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সামনে এগোতে হচ্ছে, তাদেরকে এক কথায় পাহাড় সমান বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এগোতে হচ্ছে। যেকোনো স্তরের শিক্ষা উন্নয়নের জন্য মোটা দাগে দুটো ক্ষেত্রে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন হয়, প্রশাসনিক ও একাডেমিক। প্রশাসনিক বিষয়টি আবার কয়েক স্তরে বিভক্ত, একইভাবে একাডেমিক উন্নয়নের জন্যও বেশ কয়েকটি সেক্টরেরর উন্নয়ন প্রয়োজন। সবগুলোই ছিলো অবিন্যস্ত, এলোমেলো আর দুর্নীতির আখড়া। এই তিন মাসের মধ্যে কোনটিতে তারা হাত দেবেন আর কোনটিতে কতোটা বড় পরিবর্তন আনবেন এসব চিন্তা-ভাবনা কোনো শিক্ষক সংগঠনও করছে না এবং সরকারকে সে ধরনের বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েও সহায়তা করছে না। শুধু দাবি-দাওয়া আদায় করার চেষ্টা ছাড়া তেমন কোনো গঠনমূলক কর্মকাণ্ড আমরা দেখতে পাইনি। দেশের মুদ্রণশিল্পের বারোটা বাজিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে দেড়যুগ ধরে বই ছাপানো দেশবিরোধী কাজ, দেশের মুদ্রণশিল্পের সঙ্গে বেইমানি করা। এতো বছরের এতো কঠিন কাজ, পাকাপোক্ত কাজ মিডিয়ার দাবির কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাদ দিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের শিল্পকে সহায়তা করেছে। এই দাবি কিন্তু এদেশের শিক্ষক সমাজও করেনি, করেনি কোনো শিক্ষক সংগঠন। সরকারের এই কঠিন কাজটির কথা কেউ বলছেও না, প্রশংসা তো দূরের কথা।
সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি স্থগিত করে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আসন্ন ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ২০টি প্যাকেজে মোট ৯৮টি লটের মধ্যে ৭০টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। অবশিষ্ট পাঠ্যপুস্তকের জন্য দরপত্রও আহ্বান সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য মোট ৫ হাজার ১৬৬টি শিক্ষকের পদ সৃজন আদেশ জারি করা হয়েছে। ৪০তম বিসিএস থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত ২০৮ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষক পদে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উপানুষ্ঠানিক ব্যুরোর আওতাধীন লার্নিং সেন্টারগুলো পাঠ কার্যক্রম পুরো চালুর লক্ষ্যে গত ১৩ আগস্ট নির্দেশনা জারি করে সরকার। ১৮ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিবীক্ষণের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জেলাভিত্তিক মনিটরিং টিম গঠন করে। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিখন পদ্ধতির উৎকর্ষ সাধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ এবং প্রাথমিক শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে কনসালটেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক পদ হতে ৭ জনকে উপ-পরিচলাক পদে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হতে ১৫৫ জনকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের অপারেশন ম্যানেজার ও সিস্টেম অ্যানালিস্ট পদে দুইজনসহ সর্বমোট ১৬৪ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইসিটি ও হিসাব শাখার ৫টি পদ স্থায়ীকরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আইন অনুবিভাগ সৃজনের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে ছোট ক্যাটাগরি হতে বড় ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৭টি নন-ক্যাডার পদ সৃজনের নিমিত্ত সার-সংক্ষেপসহ প্রস্তাব প্রশাসনকি উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সহকারী শিক্ষক (সংগীত) ২ হাজার ৫৮৩টি ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) ২ হাজার ৫৮৩টিসহ মোট ৫হাজার ১৬৬টি শিক্ষকের পদ সৃজন আদেশ জারি করা হয়েছে। সারাদেশে ১৫০টি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করার লক্ষ্যে সর্বমোট ৪ হজার ৫৩১ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত প্রকল্প সরকারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচির ওপর গত ৫ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩’ এর তৃতীয় গ্রুপের (ঢাকা ও চট্টগাম বিভাগ) নিয়োগযোগ্য শূন্যপদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের ফলাফল প্রকাশ ও চূড়ান্ত নিয়োগের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ কাজগুলোকে আমরা পজিটিভলি দেখছি। কিন্তু এগুলোই সব নয়, সরকারকে আরো কৌশলী হতে হবে। শিক্ষার সব স্তরেই স্বল্পকালীন, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সেগুলো বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইএফটির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন প্রদান কথাটি আধুনিক ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু এর পেছনে যে লক্ষ কোটি শিক্ষকের অমানবিক হয়রানি লুক্কায়িত রয়েছে সেটি কিন্তু মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাউশি পর্যন্ত কেউ এর সমাধান কিংবা হয়রানি বন্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করতে পারেননি। এখানে প্রয়োজন ইনোভেটিভ পদক্ষেপ, মান্ধাতার আমলের বা ব্রিটিশ সিস্টেম এখানে কাজ করবে না। শিক্ষকের কারোর নাম ছিলো সার্টিফিকেটে বাংলা সেটি এক জেলা শিক্ষা অফিস ইংরেজি করেছে যা নামের মূল বানানোর সঙ্গে মিলছে না। আবার কারোর নাম ইংরেজি থেকে বাংলায় করা হয়েছে সেখানেও মিলছে না। আর এই নাম না মেলা সেটি শিক্ষকের নিজের ক্ষেত্রে, বাবা-মা বা স্বামীর নামের ক্ষেত্রে, একইভাবে ঠিকানায় ভূল হওয়া বা ভুলভাবে রেকর্ড করা শিক্ষা অফিসগুলোর যে কতো খুশির বিষয় সে খবর কেউ তলিয়ে দেখছে না। এক একটি নাম বা ঠিকানা সংশোধনের নামে শিক্ষা অফিসগুলো বেসরকারি শিক্ষকদের সমুদ্র পরিমাণ হয়রানির মধ্য ফেলে দেয়। কারণ, তারা জানেন হয়রানি যতো গণ্ডগোল পাকানো যাবে ততো বেশি টাকা আদায় করা যাবে। উচিত ছিলো, শিক্ষকদের অনলাইন অ্যাকসেস দিয়ে একেক জেলার শিক্ষকদের ৩-৭ দিন সময় দিয়ে নিজেরা সুন্দরভাবে তাদের নাম ঠিকানা সংশোধণ করবেন। তা না করে দেয়া হয়েছে শিক্ষা অফিসারদের হাতে তারা একেতো ঘুষের রাজত্ব প্রসারিত করার সুযোগ পান, তেমনি ঢিমে তেতলার গতিতে কাজ করেন। যে কাজ হওয়ার কথা কয়েক ঘণ্টায় সেই কাজ তারা কয়েক বছরেও করতে পারেন না। একই অবস্থা বিভাগীয় শিক্ষা অফিস ও মাউশি অধিদপ্তরের।
বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কার্যক্রম ও বেতনভাতাদি প্রদান সংক্রান্ত কার্যক্রম অনলাইনে চালু করেছে। ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব মাদরাসা এডুকশেন স্কীমের আওতায় ৩২৫টি মাদরাসায় ভোকেশনাল কোর্স চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা অটোমেশন (ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা, ফলাফল ব্যবস্থাপনা, ফলাফল প্রকাশ, মার্কশিট ও সার্টিফিকেট প্রদান, অনলাইন ফি ইত্যাদি)-এর কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন মাদরাসাসমূহে কমিউনিকেটিভ ইংরেজি ও এরাবিক বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ইংরেজি ক্লাসে ইংরেজি ও এরাবিক ক্লাস এরাবিক ভাষায় পাঠদানের জন্য নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে এবং বিএমটিটিআই-এর মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষকদের আরবি ও ইংরেজি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কলেজ অনুবিভাগ ২৮তম হতে ৪২তম বিসিএস সাধারন শিক্ষা ক্যাডারের ৭৪জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন সরকারি কলেজে পদাযন করেছে। চেয়ারম্যান, মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে ৯২৭ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদমর্যদার এক হাজার ২৮টি পদকে তৃতীয় গ্রেডের বেতনস্কেল উন্নীতকরণের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। গত ২০ আগস্ট পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত ১৯ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষককে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যান্ট্রি লেভেলে শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ। এখানে পদোন্নতির জন্য কিছু ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ না করা হলে শিক্ষার মানে এসব প্রমোশনে কোন প্রভাব ফেলবে না।
তবে, হঠাৎ করে এই সরকার এটি করতে গেলে সমালোচনার মুখে পড়বে। ভবিষ্যতের জন্য একটি সঠিক পথ তাদের বাতলে দিয়ে যেতে হবে। সমস্যা রয়েছে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও। তবে, বেশি সমস্যা বেসরকারি স্কুল ও কলেজগুলোতে। উচ্চশিক্ষার সমস্যার কথা আমরা সবাই কমবেশি অবগত আছি। আমাদের এতো এতো পরিমাণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশের আনাচে কানাচে গড়ে উঠেছে সার্টিফিকেট বিক্রির প্রতিষ্ঠান। এগুলো দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে বন্ধ করা সম্ভব না, তবে তারা ভালো কোনো সাজেশন রেখে যাবেন পরবর্তী সরকারের জন্য। এগুলো করার জন্য সরকারকে একটি শক্তিশালী ‘শিক্ষা কমিশন’ গঠন করার প্রয়োজন ছিলো যেটি এখনো হয়নি।
লেখক: ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষক