একটা বিষয়, যার জন্য আমরা খুব গর্ব করতাম, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, সেটাতে একটা ধস নেমেছে। - এ আক্ষেপ নাট্যজন মামুনুর রশীদের। এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে অংশ নিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি এভাবেই নিজের হতাশা প্রকাশ করেন।
মামুনুর রশীদ বলেন, পুঁজির বিকাশ অসম, বণ্টন ব্যবস্থা ভীষণ অসম্, মূল্যবোধের একটা বড় অবক্ষয় হয়েছে। এই মূল্যবোধের শিক্ষাটা দেয় শিক্ষা ব্যবস্থা। আমি কোনটা করবো, কোনটা করবো না, আমার যাপিত জীবনে কোনটা করা উচিত কোনটা উচিত না, আমি জীবনটাকে কিভাবে যাপন করবো- এই জায়গাটায় একটা বড় ধরনের ধস নেমেছে। একটা সময় ছিলো, যারা লেখাপড়া করতেন, তাদেরকে যদি জিজ্ঞেস করা হতো, লেখাপড়া করেন কেনো , তাহলে বলতেন- দেশের জন্য। …. এখন উচ্চশিক্ষার সুযোগ বেড়েছে। কিন্তু এই যে সত্যিকার শিক্ষা যেটা, যে শিক্ষা থেকে আমাদের মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতি সৃষ্টি হয়, সেই শিক্ষার জায়গা তো আমাদের ধসে গেছে।
মামুনুর রশীদ বলেন, যিনি শিক্ষকতা করেন তিনি তার পড়ানোর চাইতে বেশি গুরুত্ব দেন কোচিং সেন্টারে। আমাদের সময় তো কোচিং সেন্টার এভাবে ছিলো না। আমরা প্রাইভেট পড়তাম, আমাদের এসএসসি পরীক্ষার আগের দিন মাস এবং তখন অনেক শিক্ষকই টাকা নিতেন না, বিনামূল্যে প্রাইভেট পড়াতেন। আজকে যারা এই দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী শিক্ষক, যারা জীবিত আছেন, রিটায়ার্ড করে গেছেন, একটিভ আছেন, তাদের যদি জীবনী সংগ্রহ করেন, সেখানে আপনি পাবেন তারা এই যে ওয়ান নাইট প্রিপারেশন নোটবুক- এগুলি পড়েন নাই, টেক্সট বই পড়েছেন। তারা ভালো শিক্ষক ছিলেন। আমার তো ভীষণ গর্ভ হয়। পাশাপাশি দুঃখ হয় আমাদের সন্তানদের জন্য যে, আমাদের সময় আমরা অনেক ভালো শিক্ষক পেয়েছিলাম। আপনি কল্পনা করতে পারবেন না একটি মাধ্যমিক স্কুলের হেডমাস্টার বেতন পেতেন মাত্র ৪০ টাকা। তাও একসাথে না, মাস ব্যপি পেতেন। কিন্তু ক্লাস রুমে তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি ছিল না। কোথা থেকে যে এনার্জি আসতো ? এখন একটা ছেলে বা মেয়ের পিঠে এত জ্ঞানের বোঝা, বইয়ের বোঝা, কিন্তু জ্ঞান নেই, জ্ঞান চর্চা ভীষণভাবে কমে গেছে।