পিরোজপুরের কাউখালীতে এক শিক্ষিকার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে পরীক্ষার এক দিন আগে প্রশ্ন না দেয়ায় এক শিক্ষক মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১৪ নং মধ্যে সোনাকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলন কৃষ্ণ পাল এ অভিযোগ তুলেছেন। তার অভিযোগ, স্কুলের সহকারী শিক্ষক নাদিরা কানিজের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে পরীক্ষা একদিন আগে প্রশ্ন না দেয়ায় তাকে মারধর করেছেন শিক্ষিকার স্বামী মো. মনিরুজ্জামান।
গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার সোনাকুর পাল পাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। শিক্ষক মিলন কৃষ্ণ পাল কাউখালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি উপজেলার ১৪নং মধ্যে সোনাকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগে শিক্ষক মিলন কৃষ্ণ পাল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে প্রথম প্রান্তিক মুল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়। ওই দিন মুল্যায়ন পরীক্ষা শেষে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোসা. নাদিরা কানিজ তার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের জন্য গোপনে ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্ন চান। এসময় প্রধান শিক্ষক পুনরায় এ ধরনের অনৈতিক দাবি আর না করার জন্য তাকে সাবধান করেন। তখন ওই শিক্ষক প্রধান শিক্ষককে ২-১ দিনের মধ্যে দেখিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন। পরের দিন বুধবার সকালে শিক্ষিকা নাদিরা কানিজ স্কুলে এসে তার মেয়েকে ওই দিনের পরীক্ষা দেয়াবেন না বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে টিসির জন্য একটি আবেদন করে পরীক্ষা শেষে তিনি চলে যান। ওই দিন বিকেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলন কৃষ্ণ পাল তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলেন। তখন নাদিরা কানিজের স্বামী মনিরুজ্জামান পেছন থেকে তাকে মারধর করতে থাকে। এসময় তিনি চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। এসময় মনিরুজ্জামান তাকে মারধর ও স্কুলে গেলে দেখিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়ে চলে যান বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষক।
জানতে চাইলে শিক্ষিকা নাদিরা কানিজ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা আমার কাছে অভিযোগ করেন যে প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে প্রথম পরীক্ষার আগের দিন প্রধান শিক্ষককের সঙ্গে আমার কথা-কাটাকাটি হয়। এ কারণে আমি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন স্কুলে এসে মেয়ের টিসি চাইলে তিনি টিসির জন্য আমার কাছে লিখিত আবেদন চান। মেয়ের শরীর খারাপ থাকায় সে ওই দিনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। এসব নিয়ে কথা বলতে আমার স্বামী ওই দিন বিকেলে মিলন স্যারের বাড়িতে গেলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ( ওসি) মো. জাকারিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।