দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পর প্রকাশ্যে এসেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্র শিবির। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে তারা। এদিকে শিবিরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত দাবি করে তাদের আত্মপ্রকাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী তামিম স্রোতের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সমাবেশে শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, ‘১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের গণহত্যার সহযোগী সংগঠন জামায়াত-শিবির। শেখ হাসিনার সরকারের হাতে যেমন ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে হত্যার খুনের দাগ রয়েছে, তেমনি ৭১-এর গণহত্যার রক্তের দাগও জামায়াত-শিবিরের হাতে লেগে রয়েছে। এই গণহত্যার দায় তারা অস্বীকার করতে পারে না। আশির দশকেও ছাত্রশিবির একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিকৃষ্টতম কার্যক্রম চালিয়েছে। এখন আবারও তারা পুনর্বাসিত হওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। আমরা বারবার সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে প্রতিহত করে এসেছি। যার ফলশ্রুতিতে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছাত্রশিবিরকেও এদেশের ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ‘১৯৭১ এবং ২০২৪, এই দুই সালকে যারা অস্বীকার করবে তাদের কখনোই জনগণ ক্ষমা করবে না। আজকে দেখলাম, শিবির যে প্রেস রিলিজ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে সেখানে মিথ্যাচার করেছে। কবির, দিপু হত্যা, হুটহাট সশস্ত্র আক্রমণ এগুলো নিয়ে শিবির কখনও ক্ষমাপ্রার্থী হয় না। ছাত্রশিবিরকে কোনোদিন দেখিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আন্দোলন করতে, কোনোদিন কি তারা শ্রমিক হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেছে? তারা সব সময় শাহবাগ আর শাপলা চত্বর ভাগাভাগি করতে ব্যস্ত। এরকম বিভাজনের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ।
‘যে রাজনৈতিক দলের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে সেই সংগঠনকে রাজনীতি করতে হলে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। সেটি সামাজিক বিচারও হতে পারে, আইনি বিচার হতে পারে। এজন্য ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদের ক্যাম্পাসে আসতে হবে।’