বুদ্ধি একটি মানসিক ক্ষমতা। শিশু জন্ম থেকে সব বুদ্ধি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। শিশু শীরিরিক ও মানসিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধি বিকাশ হতে থাকে। সকল শিশুর বুদ্ধি এক নয়। কোনো শিশুর গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা বেশি থাকতে পারে, কোনো শিশুর আবেগিক বুদ্ধিমত্তা বেশি থাকতে পারে। শিশুর মানসিক বিকাশ সঙ্গে বুদ্ধি বিকাশের সম্পর্ক রয়েছে। শিশু খাদ্য ও পুষ্টি, শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে বুদ্ধি বিকাশের সম্পর্ক রয়েছে।
আবেগিক বুদ্ধিমত্তা বলতে বোঝায় নিজেকে ও অন্যকে বুঝতে পারা, সমস্যা সমাধান করতে পারা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারা, নিজেকে পরিচালিত করতে পারা। শিশুর আবেগিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশে শিশু বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। শিশুদের কাছে গল্প বলতে হবে। শিশুকে সমস্যা সমাধান করতে দিতে হবে। মানুষের প্রতি সমব্যথী হওয়ায় উৎসাহিত করতে হবে। শিশুকে আত্মসংযোমে উৎসাহিত করতে হবে।
শিশুর সামাজিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশের জন্য শিশুকে সমাজ ও বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিতে হবে। তাদের মতামত শুনতে হবে। শিশুর সামাজিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশ হলে তারা অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। ছোটদের স্নেহ করতে ও বড়দের সম্মান করতে শেখে। সমাজে মেশার দক্ষতা অর্জন করে। নৈতিক বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে শিশু ভালো ও মন্দের প্রার্থক্য করতে শেখে। নৈতিক মূল্যবোধ শিশুকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এই বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি না করা, অন্যের মতকে সম্মান করতে শেখে।
শিশুর সমস্যা সমাধানের বুদ্ধিমত্তা যতো ভালো হবে ততো শিশু প্রতিকূল পরিবেশে সমস্যা সমাধান করতে পারবে। শিশুর ভাষাগত বুদ্ধিমত্তা বিকশিত হলে শিশুরা সুন্দরভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। অন্যের সঙ্গে ভালোভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। ভাষাগত বুদ্ধি বিকাশে শিশুকে বেশি বেশি কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। শিশুকে বলতে উৎসাহিত করতে হবে। শিশুর গাণিতিক বুদ্ধির মাধ্যমে শিশুর সহজেই গণিতের সমস্যার সমাধান করতে পারে। গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশের জন্য শিশুকে গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে দিতে হবে। শিশুরা যৌক্তিক বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে শিশু যুক্তি দিতে শেখে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শরীরবৃত্তীয় ও অঙ্গসঞ্চালনের বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে শিশুরা সঠিকভাব অঙ্গ সঞ্চালন করতে পারে। এ ধরনের বুদ্ধিমত্তার শিশুরা স্নায়ুবিকভাবে খুব সচেতন হয়। এ ধরেনের বুদ্ধিমত্তা বিকশিত হলে শিশুরা খেলাধুলা ও নাচে ভালো হয় এবং ভালো করে অঙ্গসঞ্চালন করতে পারে। যেসব শিশুদের অন্তব্যক্তিক বুদ্ধিমত্তা বেশি থাকে তারা চিন্তাশীল হয়। তারা কোনো কিছু নিয়ে ভাবতে পছন্দ করে। সৃষ্টিশীল কাজ করতে পছন্দ করে। অন্তব্যক্তিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশে শিশুকে ধ্যান শেখাতে হবে। তাকে চিন্তা করার সুযোগ দিতে হবে।
শিশুকে অতিরিক্ত পড়াশুনা চাপিয়ে দেয়া যাবে না। শিশুকে নিয়ে বেড়াতে যেতে হবে। শিশুকে খেলতে দিতে হবে। শিশুকে বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিতে হবে। শিশুকে আঁকার জন্য কাগজ ও পেনসিল দিতে হবে। শিশুর আগ্রহ ও পছন্দকে গুরত্ব দিতে হবে। শিশুর হাতে অতিমাত্রায় মোবাইল দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুর জন্য বয়স উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুকে ঘরের ছোটখাটো কাজ করতে দিতে হবে। নিজের কাজ নিজে করার উৎসাহিত করতে হবে। শিশুর ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে।
লেখক: ইন্সট্রাক্টর (সাধারণ) পিটিআই, সোনাতলা, বগুড়া