কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি করে মোহাম্মদপুর বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ (৪৫) হত্যার অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা জনৈক এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি এ মামলার আবেদন করেন। দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪/১৪৯ ধারায় এ মামলার আবেদন করা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ পরে দিবেন মর্মে জানিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মামুন মিয়া মামলার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেখ হাসিনা- ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি হারুন-অর-রশীদ (ডিবি হারুন) ও অতিরিক্ত যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমারকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি কোটা সংস্কার আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলছিলো। কোনো প্রকার উস্কানি ছাড়া আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা গুলি করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেতুমন্ত্রী আন্দোলন শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দেন। অন্য আসামিরা ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তাদের অধীনস্ত পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি আসাদুজ্জামান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন।
গত ১৯ জুলাই বিকেল ৪টায় মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করছিলো। সেই আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। সে সময় মোহাম্মদপুর বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ (৪৫) রাস্তা পার হয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সঙ্গে-সঙ্গে মারা যান। তার মাথার এক পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন জানায়, আবু সায়েদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার পর স্থানীয়রা তার লাশ গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়োয়া বামনহাট ইউনিয়নের নতুন বস্তি প্রধানহাটে পাঠিয়ে দেয় এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।
যেহেতু নিহত আবু সায়েদের গ্রামের বাড়ি সুদূর পঞ্চগড়ে এবং তার পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসেবে বাদী এ মামলার আবেদন করলেন।