শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - দৈনিকশিক্ষা

শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী?

মাছুম বিল্লাহ |

প্রতিবছর একটি শিক্ষা মৌসুমে গণমাধ্যম ছাড়াও পুরো সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি সংবাদ সয়লাব হয়ে থাকে। যদিও সেটি এখন তেমন গুরুত্ব বহন করে না। অনেক শিক্ষক আমাকে বলেছেন, ‘বিষয়টি খুব হাস্যকর অবস্থায় পৌঁছেছে।’ আসলেই হাস্যকর। সেই হাস্যকর সংবাদটি হচ্ছে-উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক কিংবা জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা, বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা।

এ সংবাদ ছাপা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয় ওই শিক্ষক কিংবা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিশাল এবং সিরিয়াস কোনো পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের বিশেষ কোনো টিম তাদেরকে দীর্ঘসময় গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন, যার ফল তারা পেয়েছেন এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সেই রেয়ার সংবাদটি গুরুত্ব সহকারে ছেপেছে কিংবা প্রচার করেছে। 

কিন্তু, কিসের ওপর ভিত্তি করে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক কিংবা শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা? একজন শিক্ষক কী কী করলে এলাকার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হবেন, জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হবেন, বিভাগের মধ্যে এবং জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হবেন? মানদণ্ডগুলো কী কী? সেসব মানদণ্ড কিংবা নির্দিষ্ট কোনো ক্রাইটেরিয়ার উল্লেখ কোথাও নেই। হঠাৎ করে পত্রিকায় কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা। একজন শিক্ষক উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হলে শিক্ষার্থী, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি কিংবা সহকর্মীদের কতোটা কাজে লাগবে, জাতীয় পর্যায়ে কীভাবে কাজে লাগবে? তার বর্ণনা তো থাকতে হবে। শিক্ষক বা শিক্ষা কর্মকর্তা তাদের পেশাগত জীবনের কর্মপরিধিতে কতোটা পরিবর্তন এনেছেন, তার চারদিক কতোটা পরিবর্তন করতে পেরেছেন সেটি যদি প্রকাশ করা হয় তাহলে বিষয়টি অনেকের জন্য উদহারণ হয়ে থাকতে পারে।

যিনি শ্রেষ্ঠ শিক্ষক কিংবা শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা হয়েছেন তিনি কী এমন নতুন কিছু আবিষ্কার করেছেন যা আগে কেউ করেননি?  

শিক্ষকতায় ইনোভেশন প্রয়োজন। তিনি কী এমন কিছু ইনোভেট করেছেন যেটি সবার জন্য অনুসরণযোগ্য এবং উদ্দীপক? তিনি কি জীবনে কখনো প্রাইভেট পড়াননি কিংবা পড়ালেও গরিব ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে কোনদিন অর্থ নেননি? এমনটি কি ঘটেছে যা জাতির সামনে উদাহরণ হিসেবে দেখানো যেতে পারে? 
একজন শিক্ষককে বিদ্যালয়ের অন্তত ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভালো বলেন, তার পড়ানোর ধরন ভালো, তার আচরণ শিক্ষকসুলভ, তার বোঝানোর ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে আলাদা, তিনি নতুন কোনো বিষয়, নতুনভাবে, আনন্দের মাধ্যমে অন্যদের থেকে আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের বিষয় কি সেভাবে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেছেন যা বহু শিক্ষকের অনুকরণ ও অনুসরণযোগ্য? তিনি কি প্রায় ৭০ শতাংশ অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, অভিভাবকেরা তার কথা শোনেন, তার আহ্বানে অভিভাবকেরা সমাবেশে যোগ দেন, যেটি আর কোনো শিক্ষক করেননি? তার অনেক ক্লাস,  কাজ ও বিভিন্ন পারফরম্যান্স প্রতিষ্ঠান প্রধান, প্রতিষ্ঠান কমিটির শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ পর্যবেক্ষণ করে লিখিতভাবে কি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন? একেবারে পিছিয়ে পড়া নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীকে তিনি ওপরে তুলেছেন-এমন নজির কি সৃষ্টি করেছেন? তিনি কোনোদিন ছুটি নেননি কিংবা বছরে মাত্র দুই ঈদে, পূজায় ছুটি নিয়েছেন তাও সরকারি ছুটি। ব্যক্তিগত কোনো ছুটি নেননি, এমনটি কি ঘটেছে? তার শিক্ষার্থীরা ডিবেট কিংবা অন্য কোনো কাজে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা-এমন ঘটনাবলি একজন শিক্ষকের কিংবা শিক্ষা কর্মকর্তার জীবনে কী ঘটেছে, যেগুলোর রেকর্ড রাখা হয়েছে অত্যন্ত গোপনীয়তা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে?

অধিকাংশ শিক্ষার্থী, অধিকাংশ অভিভাবক, অধিকাংশ সহকর্মী, প্রতিষ্ঠান প্রধান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার, কমিটির বৃহদাংশের সদস্যরা কি কোনো বিশেষ বিশেষ গুণাবলির উল্লেখ করেছেন যেজন্য একজন শিক্ষক কিংবা একজন শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলা/জেলা/বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন? তিনি কি নতুন কোনো পদ্ধতিতে তার বিষয় পড়িয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে বিশেষ কোনো কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন, কিংবা কোনো গবেষণা করেছেন যার ফল অনেকের কাজে লেগেছে? 

এসবের কোনোটিই যদি না হয় তাহলে কিসের ওপর ভিত্তি করে একজন শিক্ষক শ্রেষ্ঠ হওয়ার যোগ্যতা ও সম্মান অর্জন করছেন? এ ধরনের তথাকথিত শ্রেষ্ঠত্বে কি কোনো তৃপ্তি পাওয়া যায়? এটি কেনো করা হচ্ছে? বিষয়টিকে এতো হালকা ও হাস্যকর কেনো করা হচ্ছে? এমন অনেক শিক্ষকের নামও এই শেষ্ঠদের মধ্যে দেখা যায় যাদের কু-কীর্তিতে এলকার লোকজন বিরক্ত, মহাবিরক্ত। 

ফেসবুক পেজে এক শিক্ষকের একটি পোস্ট দেখলাম। তার কাছে এই মর্মে একটি মেসেজ এসেছে, শিক্ষায় তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন, তাই তাকে একটি সম্মাননা দেয়া হবে। ওই শিক্ষক জানতে চাইলেন, কী ধরনের অবদান তারা লক্ষ্য করেছেন, উত্তরে তখন স্পেসেফিক কিছু বলতে পারেননি আয়োজকরা। কিন্তু তারা তাকে সম্মাননা দেবেনই এবং এজন্য কিছু খরচাপাতির কথা বললেন। সেটি বেশি নয়, শুধু হাজার দশেক টাকা। ওই শিক্ষক টাকা দিয়ে সম্মাননা নেবেন না, জানিয়ে দিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনাও ঘটছে। 

আবার কিছু শিক্ষক সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে বলছেন, অমুক প্রতিষ্ঠান তাদের বিরল সম্মান প্রদর্শন করেছে, সার্টিফিকেট দিয়েছে ইত্যাদি। শিক্ষকদের মধ্যে এসব কী হচ্ছে? এগুলো তো শিক্ষকতার সঙ্গে মানায় না। বিষয়টি দাঁড়িয়েছে অনেকটা,  ‘প্রেডেটরি জার্ণালে’ লেখা ছাপার মতো। এই অনলাইন ও ব্যবসার যুগে যে যেভাবে পারছে ‘টু পাইস’ কামাচ্ছেন। কাজেই শিক্ষাক্ষেত্রে যারা চালাক-চতুর তারা বসে থাকবেন কেনো? তারা জার্নাল বের করেন। বিভিন্ন শিক্ষকদের কাছে লেখা চান। লেখা নিয়ে সেটি ছেপে দেবেন, কিন্তু তাদের অর্থ দিতে হবে। তারা অর্থের বিনিময়ে লেখা ছাপেন। এটি যারা চোখ-কান খোলা রাখেন তারা ভালোভাবে জানেন। কিন্তু কিছু শিক্ষক সেই জার্নালের লেখা, পুরস্কার ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে হাস্যকর এক অবস্থার সৃষ্টি করেন। 

এনসিটিবির এক সভায় একবার দেখেছিলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব উপস্থিত শিক্ষকদের বলছেন, আপনারা মামা-চাচা ধরে এখানে এসে সবাই বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছেন। সবাই এক একজন বিশেষজ্ঞের চেয়ার দখল করেছেন। এখানে অনেকেই প্রফেসর হয়েছেন। জীবনে কোনো গবেষণাপত্র লিখেছেন? নিজ থেকে কোনো একটি রচনাও লিখেছেন, এমনকি একটি প্যারাগ্রাফও নিজ থেকে লেখেননি অথচ সবাই প্রফেসর হয়েছেন। সরকারি কলেজে এখন প্রফেসরের ছড়াছড়ি। ক্রাইটেরিয়া কী? তেমন কোনো ক্রাইটেরিয়া নেই। এতো বছর চাকরিতে আছেন, ধরা করা একটু বেশি কিংবা অন্য কোনো পরিচয় আছে তাই তিনি প্রফেসর। কী লিখেছেন, কী গবেষণা করেছেন, কী আবিষ্কার করেছেন, কী বিশেষ অবদান রেখেছেন কিংবা আলাদাভাবে, নতুনভাবে কিছু করেছেন এমন কোনো উদাহরণ নেই। 

তো এ ধরনের প্রফেসর হলে কতোটুকু তৃপ্তি পাওয়া যায়? মজার ব্যাপার হলো- কোনো অধ্যাপক বা এনসিটিবির কোনো বিশেষজ্ঞ একটি কথাও বলেননি। 

এখানে আর একটি বিষয় যোগ করার আছে, সেটি হচ্ছে, সরকারি কলেজের শিক্ষকদের যখন প্রমোশন দেয়া হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো পাবলিকেশন বা অবদানের মতো কিছু একটা থাকা উচিত, তা না হলে এর মূল্য বোঝা মুষ্কিল। যেমন, এখন লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাচ্ছেন, কার মেধা বা বিষয়জ্ঞান কতোটা আছে বোঝার কোনো সাধ্য নেই। মূল্যায়নও হচ্ছে সেভাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় একটু বিষয়জ্ঞান ও মেধা যাচাইয়ের চেষ্টা করা হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হচ্ছেন। একজন অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে সে রকম হওয়াটা ঠিক নয়। একজন শিক্ষক অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলে যেনো বোঝা যায় শিক্ষকতায় তার অবদান কতোটুকু, তিনি কোন কোন বিষয়ে পাণ্ডিত্য অর্জন করেছেন, শিক্ষায় তার কতোটা অবদান আছে ইত্যাদি। তিনি অবশ্যই অন্যান্য শিক্ষকদের থেকে আলাদা। একজন অধ্যাপক একটি প্রতিষ্ঠান, এটি যেনতেন খেলা নয়, এটি রাজনীতি নয়। সেই বিষয়টিকে আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

একসময় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা বোর্ডে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ থেকে শুরু করে দশম স্থান, একাদশ, দ্বাদশ এভাবে বিশতম পর্যন্ত তার স্থান অধিকার করতেন। পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর যারা মেধা তালিকায় স্থান অধিকার করতেন তাদের ছবি ছাপা হতো, রেডিও, টেলিভিশনে তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হতো। বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদেরকে অভিভাবদন জানাতো। তার আলাদা একটি ইমপ্লিকেশন ছিলো, আলাদা গুরুত্ব ছিলো, যদিও তার মধ্যেও কিছু কিন্তু ছিলো।

কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজে প্রথম যেদিন ডিউটি অফিসার ছিলাম সেদিন ডিউটি ক্যাডেট ছিলেন ফেরদৌস, কুমিল্লা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম স্থান অধিকারী। ওই ধরনের শিক্ষার্থীদের দেখলেই বোঝা যায় তারা আলাদা। ক্যাডেট কলেজে টেস্ট পরীক্ষার ফল দেখার পর শিক্ষকেরা মোটামুটি বলে দিতে পারতেন, কোন ক্যাডেট বোর্ডে প্রথম স্থান অধিকার করবেন, কে দ্বিতীয় হবেন এবং এভাবে মোটামুটি ধারণা বাস্তবেও ফলে যেতো। শিক্ষাথীদের মধ্যে এক ধরনের বড় উৎসাহের বিষয় ছিলো। কিন্তু সেটিকে আমরা বাদ দিয়ে শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এ কী চালু করছি? তখনকার বোর্ডে যারা পজিশন পেতেন, তাদের অবস্থা বর্তমান যুগের জিপিএ-৫ এর মতো নয়। শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের সমস্যার কারণে এই বর্তমানের এই অবস্থা। 

এর মধ্যে আবার শুরু হয়েছে জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ, বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক! কী দিয়ে শ্রেষ্ঠ, কীভাবে শ্রেষ্ঠ, কে বা কারা নির্বাচন করেছেন? জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হওয়া, এটি কি চাট্টিখানি কথা? শ্রেষ্ঠ মানে কী? তিনি বিষয়ে ওই জেলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো, আচরণে সবচেয়ে ভালো, মানবিকতায় সবচেয়ে ওপরে, সামাজিকতায় সবার ওপরে, নতুন কিছু করায় সবার ওপরে, কালচারাল দিক দিয়ে সবার ওপরে। এগুলোর কোনো বাছবিচার নেই, বলে দিলাম উনি জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক! বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের চিন্তা করতে হবে। এতো বড় ও এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে এভাবে হালকা করার কোনো মানে হয় না। 

কোনো শিক্ষকের অবদানের স্বীকৃতি এমনভাবে দিতে হবে যাতে তিনি বা তারা তৃপ্তি পান, তারা যেনো বোঝেন এটি তাদের প্রকৃতভাবেই অর্জিত। এটি অন্য কোনো পন্থায় আসেনি এবং জেলায় প্রথম, বিভাগে প্রথম কিংবা জাতীয় পর্যায়ে প্রথম বা দ্বিতীয় বললে মানুষের মনে যাতে প্রশ্ন না জাগে, কীভাবে একজন শিক্ষক প্রথম, কেনো প্রথম, শিক্ষায় ওনার কী অবদান, শ্রেণিকক্ষে, প্রতিষ্ঠানে তার কী অবদান রয়েছে? সেগুলো জাতীর সামনে পরিষ্কার  হতে হবে। তাহলে সবাই উৎসাহিত বোধ করবেন। আমরা নুরুল ইসলাম স্যারের কথা অনেকেই শুনেছি, অনেকেই সুন্দরগঞ্জে তার পরিবর্তন করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা একটি কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনীয় দেখে এসেছি। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেখানে সরকারি নিয়ম-কানুনের গ্যাঁড়াকলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক কিছু করা যায় না, সেই পাহাড়সম অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন নূরুল ইসলাম স্যার। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর কী করেন আমি দেখেছি। তার চেয়েও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনেক বেশি কিছু করেছেন। দেশ-বিদেশ থেকে তার বিদ্যালয় দেখতে আসেন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা।

এ ধরনের শিক্ষকের কথা আলাদা, তাদের কিন্তু জাতীয় পুরস্কার দেয়া হয় না, তাদের কথা বলা হয় না যে, তিনি শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। এ ধরনের শিক্ষক, এ ধরনের বিদ্যালয়ের প্রচার দরকার, প্রসার দরকার যাতে শিক্ষকেরা উৎসাহিত হতে পারেন। এসবের দিকে আমরা খেয়াল না করে কিসের ওপর ভিত্তি করে উপজেলা, জেলা, বিভাগ এমনকি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা নির্বাচন করছি আর সেই খবরে সোশ্যাল মিডিয়া ভাসিয়ে দিচ্ছি। শিক্ষায় এর প্রকৃত ইমপ্লিকেশন কী? এতে কি কোনো শিক্ষক উৎসাহিত হচ্ছেন নতুন কিছু জানার জন্য, নতুন কিছু করার জন্য, শিক্ষায় নতুনভাবে অবদানের জন্য? উক্ত শ্রেষ্ঠ শিক্ষককে কি কেউ অনুসরণ করার কথা বলছেন? তাহলে কীভাবে একজন শিক্ষক শ্রেষ্ঠ? আমরা বরং বলতে পারি ‘অমুক শিক্ষক’ কিংবা ‘প্রধান শিক্ষক,’ অধ্যক্ষ, শিক্ষা কর্মকর্তা শিক্ষার এই বিষয়ে প্রভূত সাফল্য প্রদর্শন করেছেন যার উদাহরণ আমরা সহজে দেখি না। তাকে আমরা একজন আদর্শ শিক্ষকের আসনে অধিষ্ঠিত করতে পারি। 

 

পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা - dainik shiksha পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম - dainik shiksha ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় - dainik shiksha এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো - dainik shiksha প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004040002822876