শ্লীলতাহানির শিকার হওয়া যশোরের মণিরামপুরের দেলুয়াবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়। ওড়না ধরে টানাটানি করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন তার শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই শিক্ষিকা। তাই, প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করে লাঞ্ছিত করেছেন তিনি। আর এ ঘটনার পরপরই ওই শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুরো ঘটনা তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি আমলে দিয়ে তা তদন্তে কমিটি গঠন করেছেন খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক এ এস এম আব্দুল খালেক।
অভিযোগ তদন্তে কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যশোরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও মনিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
এর আগে গতকাল বুধবার সেই শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। তারা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে 'শ্লীলতাহানির শিকার শিক্ষিকা বরখাস্ত, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে তা আমলে নেয় খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়। এদিনই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে তার ব্যবহৃত মুঠোফেনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে, বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনিছুর রহমান তজু শিক্ষিকার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তার কিছু অনিয়মের জন্য। তবে, সম্প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাওয়ার বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদ কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এদিকে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়ায় সেই শিক্ষিকা মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায় তাকে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। যে বিষয়টি বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোন প্রতিকার হয়নি। এক পর্যায় ওই প্রধান শিক্ষকের কু-দৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে গত ১৪ নভেম্বর মহাপরিচালক, উপ-পরিচালক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। এক পর্যায় ১১ ডিসেম্বর দুপুরে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায় তার কক্ষে আমাকে একা পেয়ে ওড়না ধরে টানাটানি করে। যে ঘটনাকে সামাল দিতেই আমি তাকে জুতা পেটা করি। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলেও প্রধান শিক্ষকের হীন এ কর্মকাণ্ডের বিচার না করে আমার বিরুদ্ধে খোঁড়া অভিযোগ তুলে ১৩ ডিসেম্বর আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।