সং*ঘর্ষের দায়ভার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা-পুলিশ প্রধানের, পদত্যাগ দাবি - দৈনিকশিক্ষা

সং*ঘর্ষের দায়ভার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা-পুলিশ প্রধানের, পদত্যাগ দাবি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সঙ্গে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা-পুলিশ প্রধানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

তাদের দাবি, একদিন আগেই ঘোষণা দিয়ে একদল শিক্ষার্থী এসে ভাঙচুর করলো, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধুই চেয়ে দেখল। উদ্ভূত এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না নিতে পারার সব দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা-পুলিশ প্রধানের। অবিলম্বে এই দায় নিয়ে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে।  

সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে সংঘর্ষের কারণ এবং প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এসব দাবি করেন।

হামিমুল কবির নামে ড. মোল্লা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল থেকেই আমরা আমাদের কলেজের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। তখন আমরা ছিলাম ২০০ জনের মতো, কিন্তু হঠাৎ করেই তারা হাজার-হাজার শিক্ষার্থী এসে একসঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় কারো হাতে রামদা, কারও হাতে বিদেশি অস্ত্র এমনকি বোমাও ছিল।

তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে টিকতে না পেরে আমরা পিছু হটি। এ সময় আমাদের বেশকিছু বন্ধু-বান্ধব মারাত্মকভাবে আহত হয়। এই সুযোগে তারা কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় ভেতরে থাকা বেশকিছু শিক্ষার্থী এবং কর্মচারীকে তারা বেধড়ক মারপিট করে। আমরা শুনতে পাচ্ছি কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের এই সন্ত্রাসী হামলায় আমাদের বেশ কিছু শিক্ষার্থী মারাও গেছে।

সংঘর্ষের মূল সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল হাকিম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এই ঘটনার মূল সূত্রপাত হয় ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে। সেখানে ড. মোল্লা কলেজের এক শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে মোল্লা কলেজসহ ২৫টি কলেজ একত্রে আমরা আন্দোলন করতে গিয়েছিলাম। সেদিন সোহরাওয়ার্দী কলেজেও আমাদের সঙ্গে ছিল।

তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন চলাকালীন সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজের কিছু শিক্ষার্থী টাকা খেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চলে যায়। এমনকি সেদিন তারা আমাদের কিছু ছেলেকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এভাবে তারা দুইদিন আমাদের পিটিয়েছে, তারপরও আমরা কিছু বলিনি। এরপর আমরা সোহরাওয়ার্দী কলেজের দিকে এগিয়ে গেলে ভেতর থেকে ককটেল এবং গুলি ছোড়া হয়। তখন আমাদের স্টুডেন্টরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভেতরে ঢুকে যায় এবং ভাঙচুর চালায়। এরপর তারা আজকে সাতটি কলেজ মিলে আমাদের মারতে এসেছে।

কামরুজ্জামান নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, মোল্লা কলেজের প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট, প্রতিটি ল্যাব সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুলের শিক্ষার্থীরা এসে তছনছ করে ফেলেছে। কলেজের ভেতরে এমন একটা জিনিস নেই যা অক্ষত অবস্থায় আছে। 

তিনি বলেন, প্রশাসন যদি সময়মতো আসত এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিত তাহলে আজকের এ অবস্থা হতো না। তাদের হামলায় আমাদের অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শুনেছি বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি দায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তামাশা দেখেছে। 

মুক্তার আলী নামে আরেক স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, একদিন আগেই ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে এসে ভাঙচুর করেছে। এমনকি তাদের হামলায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর পাশাপাশি শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের কী কিছুই করার ছিল না? নাকি তারা দুই পক্ষের মারামারি দেখে মজা নিয়েছে? আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ কী? তারা চাইলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। এই যে আজকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রাণ গেল, তার দায় কি রাষ্ট্র নেবে?

তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি এই ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে পুলিশ প্রধানসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত। তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই আজ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল দশা।

হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের - dainik shiksha হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস - dainik shiksha নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর - dainik shiksha অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.027997970581055