সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালন করা ১১৭ কর্মকর্তার সংযুক্তি বাতিল করা হয়েছে। তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে। অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. ফিরোজ সরকার স্বাক্ষরিত গতকাল সোমবার এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেয়া হয়।
এসব কর্মকর্তার সংযুক্তি বাতিল করে দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও আওতাধীন প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সারা দেশে চলমান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপন, জয় সেট সেন্টার নির্মাণ, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, ফ্রি-ল্যান্সিংসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সুষ্ঠুভাবে তদারকি, সমন্বয় ও বাস্তবায়নের পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে সংযুক্তির আদেশ জনস্বার্থে বাতিল করা হলো। এসব কর্মকর্তা মূল কর্মস্থলে যোগদানের নিমিত্তে ১ জুলাই মূল কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় ২ জুলাই অপরাহ্ণে সংযুক্তকৃত কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন।
এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের নিমিত্তে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সরকার এ খাতকে বিশেষ গুরুত্বারোপ করে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বব্যাপী প্রয়োগ ও ব্যবহারে কারিগরি সহায়তা নিশ্চিতকরণ; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধাগুলো প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছানো, অবকাঠামো নিরাপত্তা বিধান; রক্ষণাবেক্ষণ; বাস্তবায়ন; সম্প্রসারণ মান নিয়ন্ত্রণ ও কম্পিউটার পেশাজীবীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ই-সার্ভিস নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জুলাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর গঠন করা হয়।’
মাঠ পর্যায়ে আইসিটি কর্মকর্তাদের গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সরাসরি জনগণের সঙ্গে কাজ করেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দেন। মাঠ পর্যায়ে আইসিটি অফিসাররা সরাসরি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা দিয়ে থাকেন। তারা স্থানীয় জনগণকে বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেন। বিভিন্ন সরকারি সেবা ডিজিটালাইজেশনে কাজ করেন। মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে আইসিটি অফিসাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন জরিপ ও ডাটাবেজ তৈরি এবং তার ভিত্তিতে নীতিনির্ধারণে সহায়তা করেন।’
ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ফলে তথ্যপ্রযুক্তির পদচারণা এখন সর্বত্র উল্লেখ করে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ অনস্বীকার্য। তথ্যপ্রযুক্তির এ অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল সর্বত্র পৌঁছে দিতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাঠ পর্যায়ে আইসিটি অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এসব কর্মকর্তা নেতৃত্ব দেবেন এবং নিজেদের দক্ষতা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা দেশকে একটি উন্নত ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে রূপান্তরিত করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।