গত কয়েক মাসে জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বেড়েছে, তাতে দেশের মানুষের একটি বড় অংশই সেই বাড়তি ব্যয় বা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতিও প্রায় ৮ অঙ্কের ওপরে। মূল্যস্ফীতির এ চাপ মোকাবিলা করা এখন সাধারণ মানুষের জীবনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় সব সঞ্চয়পত্রে প্রতি মাসে মুনাফা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর এ ধরনের একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে পাঠিয়েছে।
দেশে বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র চালু আছে। এর মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্র ছাড়া সব সঞ্চয়পত্রে মুনাফা দেওয়া হয় তিন মাস অন্তর। অর্থাৎ শুধু পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দেওয়া হয় প্রতি মাসে। আর তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশন সঞ্চয়পত্র এবং পাঁচ বছরমেয়াদি সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দেওয়া হয় তিন মাসে। এখন সব সঞ্চয়পত্রে প্রতি মাসে মুনাফা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের পাঠানো প্রস্তাবের মধ্যে পেনশন সঞ্চয়পত্রে ক্রয়সীমা বৃদ্ধি, পরিবার সঞ্চয়পত্রে ক্রেতার বয়সসীমার বিষয়েও প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে পেনশন সঞ্চয়পত্রের ক্রয়সীমা ৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিবার সঞ্চয়পত্রে পুরুষ ক্রেতার বয়সসীমা ৬৫ বছর থেকে কমিয়ে ৫০ বছরে আনারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, এটি করা হলে বেশিসংখ্যক পুরুষ পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনার আওতায় আসবে। আবার সঞ্চয়পত্রে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানও বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলে সেটি কার্যকর করা হবে। অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, তিন মাসের মুনাফা একসঙ্গে না দিয়ে প্রতি মাসে দেওয়া হলে ব্যক্তি সে টাকা কাজে লাগাতে পারবেন। সুদহার ঠিক রেখেই প্রতি মাসে মুনাফা দেওয়ার বিধান চালু হবে।
বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্র ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার কেনা যায়। ১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী, যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের বাংলাদেশি নাগরিক পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। পাঁচ বছরমেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের ডুপ্লিকেট ইস্যুও ম্যানুয়ালি করা যাবে। এ সংক্রান্ত মতামত অর্থ বিভাগের কাছে পাঠিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।