সাবিহা সুমি, সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক শিক্ষাডটকম : মেধায় অর্জিত নিবন্ধন সনদ নিয়ে ‘তামাশার’ প্রতিবাদে ও সংকট নিরসনের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ দাবিতে আজ সোমবার মানবন্ধন করেছেন কয়েকহাজার শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী। ‘এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষক ফোরাম’ এর ব্যানারে সকালে রাজধানী ইস্কাটনে বেসরকারি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) অফিসের সামনে তারা মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
কর্মসূচি চলাকালে বক্তারা দাবি করেন, মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এনটিআরসিএর কাছ সনদ লাভ করেছেন তারা। তাই অর্জিত সনদ বাতিল ও অকার্যকর করার ক্ষমতা কেউ রাখেনা। এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান মন্তব্য করেছেন, ১-১৫ তম পরীক্ষার মাধ্যমে যারা সনদ পেয়েছেন সেই সনদ বাতিল ও অকার্যকর এবং তাদের আর আবেদনের সুযোগ থাকবে না।
আরও পড়ুন: ১-১৫তম নিবন্ধনের সনদ বাতিলের খবর সম্পূর্ণ গুজব: এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান
বক্তারা বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৩,১৪,১৫,১৬,১৭তমদে তিন বছর মেয়াদি সনদ থাকলেও, ১ থেকে ১২তমদের সনদের নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ ছিল না। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুনের এমপিও নীতিমালার আগে যারা সনদ লাভ করেছে তাদের জন্য বয়স শিথিল যোগ্য। তাই এনটিআরসিএ সচিবের এই মন্তব্যকে আমরা তীর প্রতিবাদ জানাই। এই ধরনের মন্তব্য আমাদের কে মর্মাহত করার সাথে সাথে হৃদয়ে রক্তক্ষরণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করেছে। আমরা অসহায় এবং নিরুপায় হয়ে পড়েছি। এনটিআরসিএ প্রতিনিয়তই আমাদের সাথে প্রহসন করে চলেছে। দীর্ঘ বছরেও তারা কোন বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। যখন দিয়েছে, আবেদন
করেও আমাদের নিয়োগ দেয়নি। আবার তারাই আমাদের দুইটা বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বঞ্চিত করেছে। তারা আমাদের এক একবার সুযোগ দেয়, আবার কখনো দেয় না। এটা তাদের খামখেয়ালির শিকার করছে শুধু আমাদের।
বক্তারা দাবি করেন, তারা বারবার ইনডেক্সধারীদের নিয়োগ দিয়ে, আমাদের নিয়োগ বঞ্চিত করেছে। শুধু তাই নয়, ৬০ হাজার জাল নিবন্ধন সনদ কারা দিয়েছে সবাই জানে। আমাদের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ব্যবহার করে। তাদের আবার এমপিওভুক্ত করেছে। জাল সনদধারীদের বহাল তবিয়তেই স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শাখায় এখনো শিক্ষকতাই করছেন। অথচ বৈধ সনদ থাকার পরও আমাদের নিযোগ বঞ্চিত করে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে এনটিআরসিএ। কেন এতদিনেও জাল সনদধারীদের চিহ্নিত করার পরও, তাদের চাকরিচ্যুত করা হলো না ? কেন আমাদের নিয়োগ এখনও দেওয়া হয়নি? তার একটাই কারণ, তাদের দুর্নীতি ধরা পড়বে। জাল সনদের এমপিও বাতিল হবে। এই জন্যই তারা দেয়নি।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, একই সাবজেক্টে কেউ ৪২ পেয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে আবার একই সাবজেক্টে ৫৮ পেয়েও হয়নি।
বক্তারা বলেন, আমরা অসহায় নিরুপায় হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এনটিআরসিএর দুর্নীতি তাদের এই সমস্ত কার্যকলাপ প্রধানমন্ত্রী হয়তো জানেন না। যদি জানতেন, তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় সনদ বাতিলের মতো উদ্যোগ কখনোই নিতে দিতেন না, এটাই আমাদের একান্ত বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ এখন আমাদের একান্ত চাওয়া।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি নীলিমার চক্রবর্তী, সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসরিন সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সহ সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক -ছামিউল আলম, সুমন দাস, নুরুদ্দিন, প্রসেনজিৎ বাড়ৈ, মারুফ মহসিন, আজিম উদ্দিনসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা।