সন্তানের কান্নায় জোড়া লাগল সংসার - দৈনিকশিক্ষা

সন্তানের কান্নায় জোড়া লাগল সংসার

রাজশাহী প্রতিনিধি |

ছয় মাস বয়সী শিশুটির বাবা আসামির কাঠগড়ায়। আর সাক্ষীর কাঠগড়ায় শিশুটিকে নিয়ে দাঁড়িয়ে মা। শিশুটি কাঁদছে। এই দৃশ্য নজরে পড়ার পর বিচ্ছেদ হওয়া এই দম্পতির মামলা আপস করে আবার তাঁদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিয়ে হয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে-২-এ । সন্তানের কান্নায় জোড়া লেগেছে ভেঙে যাওয়া সংসার।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে কর্মচারী শিমুল পারভেজের সঙ্গে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২ এপ্রিল বিয়ে হয় জান্নাত ফেরদৌসের। তাঁদের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর এলাকার সমসাদিপুর মহল্লায়। সংসার ভেঙে যাওয়ায় গত ১২ অক্টোবর মেয়েটির মা আদালতে মামলা করেন।

গতকাল আদালতে সেই মামলার জামিন শুনানিকালে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজ্জামান লক্ষ করেন, সাক্ষীর কাঠগড়ায় জান্নাত ফেরদৌসের (বয়স হতে পারে ১৯ বছর) কোলে কাঁদছে ফুটফুটে একটি শিশু। আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো শিশুটির বাবা শিমুল পারভেজ। সামান্য ভুল-বোঝাবুঝিতে ভেঙে গেছে জান্নাত-শিমুলের সংসার। ইতিমধ্যে তা কার্যকরও হয়েছে। এ সময় আদালতে জান্নাতের বাবা-মা এবং শিমুলের বাবাও উপস্থিত ছিলেন। শুনানিকালে জান্নাতের চোখে পানি ছিল এবং শিমুলও মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুই পক্ষের আইনজীবী পক্ষে-বিপক্ষে তাঁদের বক্তব্য দিচ্ছেন কিন্তু বিচারকের দৃষ্টি পড়ে কান্নারত শিশুটির দিকে। আদালত জানতে চান শিশুটির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাদী ও আসামি আপস করতে চান কি না।

তখন জান্নাত ও শিমুল পরস্পরের কিছু দোষত্রুটি উল্লেখ করতে শুরু করেন। এই পর্যায়ে আদালত নিজ দায়িত্বে সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাঁদের উদ্দেশে কিছু উপদেশমূলক কথা বলেন। একপর্যায়ে আপস করতে রাজি হন জান্নাত-শিমুল, কিন্তু তা অবশ্যই আদালতের মধ্যস্থতায় করতে চান। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে আদালত তাঁর বিচারকার্য শেষে আদালত কক্ষের ভেতরেই উভয় পক্ষের আইনজীবী, অভিভাবক ও বার সমিতির সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে কাজি ডাকেন। আদালতের ভেতরেই ১ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক পুনরায় তাঁদের বিয়ে দেওয়া হয়। আদালত সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

সবশেষে আদালতের বিচারক স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই তাঁর খাসকামরায় ডেকে নিয়ে সুন্দর করে সংসার করার উপদেশ দিয়ে শিশুটিকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ আদর করেন। আদালতের এই মানবিক উদ্যোগে বাদী, আসামি, আইনজীবী, আদালতের পেশকার, পিয়ন, ম্যাজিস্ট্রেট—সবার চোখেই তখন আনন্দাশ্রু।

বাদী পক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা বলেন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজ্জামান আদালতে যোগদানের পরেই বিভিন্ন মামলায় তাঁর মানবিক আচরণ এবং সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে আন্তরিক মধ্যস্থতায় অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে যাচ্ছেন এবং মানবিক বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টায় আদালত কক্ষে এই ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংসার জোড়া লাগল। একটি শিশুর ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হলো।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038459300994873