দমন-নিপীড়ন বন্ধ করে ও সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘নানান প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে দেশব্যাপী লাখ লাখ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ জনসাধারণের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত গণমিছিল প্রমাণ করে, সমগ্র দেশ আজ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।’
শুক্রবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের সশস্ত্র হামলায় নিহত ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং হত্যাকারীদের বিচার ও আটকদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ দোয়া ও গণমিছিল ছিল। এ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের ন্যক্কারজনক শসস্ত্র হামলা চলায়। হবিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় নিরীহ শ্রমিক মোস্তাক মিয়া নিহত হন এবং অসংখ্য নিরীহ মানুষ আহত হয়েছেন। সিলেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে অসংখ্য মানুষকে আহত করে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক মিঠু দাস জয় গুলিবিদ্ধ হন।’
তিনি বলেন, ‘উত্তরায় পুলিশ এবং আওয়ামী ক্যাডাররা গুলি ছুড়ে আহত করেছে শিক্ষার্থীদের। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সেখানে নারী শিক্ষার্থীদেরকে এক বাসায় আটকিয়ে রাখে। নরসিংদীতে ছাত্রীদের মিছিলে মহিলা আওয়ামী লীগের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা হামলা চালায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের কর্মসূচি বানচাল করতে ফেসবুক, টেলিগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন সাইট বন্ধ করে দেয় সরকার। প্রকৃতিক ও সরকারি প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে দেশব্যাপী লাখ লাখ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ জনসাধারণের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত গণমিছিল প্রমাণ করে, সমগ্র দেশ আজ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।’
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব দমন-নিপীড়ন বন্ধ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরকারকে আর কোনো ক্ষতি না করে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে তিনি হবিগঞ্জে নিহত মোস্তাক মিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এছাড়া হবিগঞ্জ, সিলেট, খুলনাসহ অন্যান্য স্থানে সংঘর্ষে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব পেশাজীবী সংগঠন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এম-ট্যাব) সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন তুষার এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিনার হোসেনকে ডিবি পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে অত্যাচারের পর কারাগারে পাঠানোর নিন্দা করেন। অবিলম্বে এ ধরনের নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করে আটক নেতাকর্মী, ছাত্র-জনতার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে রেকর্ড সংখ্যক মিথ্যা মামলার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আইনজীবীরা মামলার কাগজ তুলতে গেলে তা না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলায় নিরীহ শিক্ষার্থী, জনসাধারণসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার ও গ্রেফতার বাণিজ্য করা হচ্ছে।’
এসব মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তা প্রত্যাহার, হয়রানি ও গ্রেফতার বাণিজ্য বন্ধ করারও দাবি জানান মির্জা ফখরুল।