পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি (সকশিস)। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন সারাদেশের কলেজ শিক্ষকরা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের এই দাবি পূরণ না হলে সকশিস নেতৃত্বে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
সমিতির দাবিগুলো হল আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীগণের বে-সরকারি আমলে প্রাপ্ত বেতন গ্রেড ও ধাপ বহাল রেখে বেতন-ভাতা নির্ধারণ এবং অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের নামে কালক্ষেপণ না করে পদ সৃজনকৃত সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে আগামী ৩০ শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এডহক নিয়োগ দিতে হবে।
পদ-সোপান তৈরি ও আত্তিকৃত শিক্ষকদেরকে সরকারি কলেজের অনুরূপ সহকারী অধ্যাপক (নন-ক্যাডার), সহযোগী অধ্যাপক (নন-ক্যাডার), অধ্যাপক (নন-ক্যাডার) পদে পদোন্নতির উপবিধি প্রণয়ন করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পদোন্নতি দেয়া।
আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীগণের বে-সরকারি আমলের ধারাবাহিক চাকুরিকালের শতভাগ সময় সরকারি চাকরিকাল হিসাবে গণনা করে বেতন-ভাতাদি নির্ধারণ, জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ, পদোন্নতি, পেনশন ও ছুটিসহ সকল ক্ষেত্রে কার্যকর করা।
আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি আত্তীকরণ বিধিমালা-২০১৮ তে আত্তীকৃত কলেজসমূহে আন্তঃবদলী যোগ্য করা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেয়া কোয়ারী ও রিভিউ কার্যক্রম আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি কলেজ বিহীন প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারিকরণের ঘোষণা দেন। এরপর ওই বছরের ৩০ জুন প্রতিষ্ঠান বাছাই করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২৮ আগষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ ও অর্থ ব্যয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের মর্যাদা, পদোন্নতি, বেতন-ভাতাদি নির্ধারণে এবং কার্যকর চাকরিকাল করে আত্তীকরণ বিধিমালা-২০১৮ জারি করা হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের জিও জারি করা হয়।
বক্তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৭ বছর, জি.ও জারির ৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৪১টি কলেজের অনু সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদন না পাওয়ায় নিয়োগ বাকি আছে ১৮৮ কলেজের। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় সৃজনকৃত পদ অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত করার নিবন্ধন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রথমে ৩৪টি কলেজ, পরে ৫৮টি কলেজ ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ ১৯১টি কাজের মত পদ এমপিও-নন-এমপিও বিভাজন করে ৪৪টি কলেজের আংশিক অনুমোদন এবং ৪৭টি কলেজ অনুমোদন বিহীন রাখা হয়। বেসরকারি আমলের গ্রেড ও ধাপ বহাল রাখা, বেতন-ভাতাদি নির্ধারণে পে-প্রোটেকশন, বৈষম্য দূর করতে বিধি সংশোধনের, পদ- ও পদোন্নতির, রিভিউ নিষ্পত্তির বহু আবেদন করা সত্বেও কোন প্রকার সুরাহা করা হচ্ছে না বিধায় আমরা মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছি।
মানববন্ধনে সরকারী কলেজ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. ইসাহাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক আ ন ম রিয়াজ উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সার্বিক ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন উপ কমিটির সদস্য মো. মনিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান পাঠান, সহ-সভাপতি জাকারিয়া মাহমুদ গোপ, মহিউদ্দিন বাবুল আব্দুল হকসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন ।