সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদনে জালিয়াতি - দৈনিকশিক্ষা

সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদনে জালিয়াতি

বরিশাল প্রতিনিধি |

দৈনিকশিক্ষাডকম, বরিশাল: বরিশালের পাঁচটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থীর একাধিক আইডি খুলে আবেদন করার জালিয়াতি ধরা পড়েছে। এমন জালিয়াতির ঘটনায় একই শিক্ষার্থী একাধিক বিদ্যালয়ে চান্স পেলেও সঠিক নিয়মে আবেদনকারী অনেকেই চান্সপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সন্তানের শিক্ষাজীবনের শুরুতেই এমন দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া অভিভাবকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন ভর্তিবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

মনজিতা দাস নামে এক শিক্ষার্থী তার জন্মনিবন্ধনের অনুকূলে তিনটি আইডি খুলে তিনটি আবেদন করেছে। লটারিতে সে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আরজু মনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে।

আরেক শিক্ষার্থী তাছনিমের জন্মনিবন্ধনের অনুকূলে তিনটি ইউজার আইডি ব্যবহার করে তিনটি আবেদন করা হয়। সে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে। রোদেলা নামের আরেক শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে সাতটি আইডি দিয়ে আবেদন করে। লটারিতে ওই শিক্ষার্থী বরিশাল সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে সুযোগ পেয়েছে। শুধু লটারিতে নাম না ওঠা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের নজরেও এসেছে এই চিত্র। তাদের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, একটি জন্মনিবন্ধনের অনুকূলে চারটি ইউজার আইডি। আবেদনকারী তিনটি স্কুলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। অপর একটি জন্মনিবন্ধনের অনুকূলেও চারটি ইউজার আইডি, সেও তিনটি স্কুলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। এ ছাড়া আরেকটি জন্মনিবন্ধনের অনুকূলে সাতটি ইউজার আইডি পাওয়া গেছে। সেও তিনটি স্কুলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। শুধু এই তিনজন নয়, বরিশালে কমপক্ষে ১৫ জন শিশু শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের জালিয়াতিতে তিনটি বিদ্যালয়ে এক সাথে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সঠিক নিয়মে আবেদনকারী শিক্ষার্থী দিব্যেবন্দু ইশানের বাবা দেবাশীষ কুণ্ডু বলেন, এক শিক্ষার্থী এভাবে চার থেকে সাতটি পর্যন্ত আইডি খুলে আবেদন করা আমি মনে করি জালিয়াতি। এমন অসাধু অভিভাবকদের কারণে আমার সন্তানের মতো অনেক শিশুর মেধা থাকলেও জালিয়াতির সামনে সরকারি স্কুলে ভর্তির চান্স পায় না। এদের জালিয়াতির কারণে শত শত শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

আরেক অভিভাবক আবিদা সুলনতানা বলেন, আমার সন্তানের জন্মনিবন্ধনের অনুকূলে একটি ইউজার আইডি খুলে আবেদন করেছি। আমার সন্তান কোথাও চান্স পায়নি। অথচ জালিয়াতি করে পুরো সিস্টেমকে ধোঁকা দিয়ে অনেকের সন্তান তিন-চারটি স্কুলে এক সাথে চান্স পেয়েছে। এই অনিয়ম না রুখলে শিক্ষার অধিকার সবার জন্য নিশ্চিত হবে না। এতে জালিয়াতি করা অভিভাবকদের যেমন দায় আছে তেমনি অনলাইন সিস্টেমেরও দায় আছে। একই জন্মনিবন্ধনে একাধিক আবেদন হলেও কী কারণে অনলাইনে তা ধরা পড়ছে না সেটি খতিয়ে দেখা উচিত।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধ্যাপক ড. মো: শামসুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, টেলিটকের ওয়েব সিস্টেম দুর্বল মনে হয়েছে। যারা এর ডিজাইন করেছে তাদের আরো সতর্ক হওয়া উচিত। ভর্তির আবেদন বিশ্লেষণ না করায় অনিয়মের সুযোগ করে দিয়েছে। প্রোগ্রামাররা অভিজ্ঞ হলে সহজেই ডাটা ডুপ্লিকেসি বন্ধ করতে পারত। ডাটা ডুপ্লিকেসি বন্ধ না করায় একই ডাটা দিয়ে একাধিক আবেদন করেছে। পরবর্তীতে আরো সতর্ক হয়ে সঠিক প্রোগ্রামিং করবে বলে আশা করছি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন জানিয়েছেন, একাধিক ইউজার আইডি তৈরি করে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে এক শিক্ষার্থী একাধিক স্কুলে চান্স পেলেও তাদের ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই। বরং আমরা টেলিটক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি যেন তারা একাধিক আবেদনকারীকে শনাক্ত করে আইডিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031619071960449