দৈনিক শিক্ষাডটকম, বেরোবি: অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার প্রজ্ঞাপন বাতিল ও স্বতন্ত্র স্কেলের দাবিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) মৌনমিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক সমিতি।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ক্যম্পাসের শেখ রাসেল চত্বরে একই কর্মসূচি পালন করা হয়।
গত বছরের গত ২৪ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল ২০২৩’ পাস হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন।
এদিকে চলতি বছরের ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেসব শিক্ষক ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাইয়ের পর যোগদান করবেন, তাদের জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিমের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং তাদের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার জন্য বিদ্যমান অবসর সুবিধাসংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে না।
মৌনমিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত ব্ক্তব্য দেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. বিজন মোহন চাকী ও সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ।
তারা বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক।
এ ধরনের বৈষম্য সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে শিক্ষাদর্শনের চেতনা থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন, এ প্রজ্ঞাপন সেই চেতনাকে অবজ্ঞা ও অবমাননা করার শামিল।
বক্তারা আরো বলেন, সর্বজনীন বলতে আমরা বুঝি, সবার জন্য। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষকদের ওপর যে স্কিম চালু করা হচ্ছে, এটি খুবই বৈষম্যমূলক।
নতুন যে পেনশন স্কিম সরকারি কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য চালু করা হলো, সেটা কীভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম হয়? সার্বজনীন মানে সবার জন্য এতে কি কোনো অস্পষ্টতা আছে? সবার জন্য যদি হয়, তাহলে সরকারি কর্মকর্তারা এর আওতার বাইরে থাকবেন কেন?
বক্তারা বলেন, প্রত্যয় স্কিমটি নামে সর্বজনীন হলেও আদতে সর্বজনীন নয়। সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে একে সর্বজনীন বলার সুযোগ নেই। স্কিমটি যদি সত্যিই সর্বজনীন হয়ে থাকে তবে একে অধিকতর সর্বজনীন করার জন্য সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকেও এর আওতায় আনা হোক। তা না হলে তড়িঘড়ি করে জারি করা এই অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক স্কিম অবিলম্বে বাতিল করা হোক। থাকার ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি জানান।