দেশের নাগরিকদের জন্য চালু হওয়া বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে (স্কিম) সাড়ে লাখ মানুষ নিবন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন। স্কিম চালু হওয়ার সাড়ে ১০ মাসে এমন মাইলফলক স্পর্শ হয়েছে। যার মাধ্যমে সরকারি ফান্ডে জমা পড়েছে ১০০ কোটি টাকা।
বুধবার (৩ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, সাড়ে নয় মাসে বিভিন্ন স্কিমে যুক্ত হওয়ার সংখ্যা লাখ স্পর্শ করে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতায় বর্তমানে মোট নিবন্ধনকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ এবং মোট জমার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি। ইতোমধ্যে জমাকৃত অর্থের মধ্যে ৯২ কেটি ৬৮ লাখ টাকা সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রবাস স্কিম, প্রগতি স্কিম, সুরক্ষা স্কিম ও সমতা স্কিম— এই চার স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার। চালুর প্রথম দিন থেকেই সাড়া মিলতে শুরু করে, ক্রমাগত যা ঊর্ধ্বমুখী।
পেনশন বিধিমালা বলছে, সর্বজনীন পেনশন প্রথায় যার যত টাকা জমা, মেয়াদ শেষে তার তত বেশি পেনশন। অন্যদিকে, স্বল্প আয়ের মানুষদেরও বিমুখ করবে না এ উদ্যোগ। যারা মাসিক ৫০০ টাকা জমাবেন, তাদের জন্য শুরু থেকেই থাকবে সরকারের আরও ৫০০ টাকার ভর্তুকি। সবমিলিয়ে, সবার জন্যই থাকছে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বাড়তি কয়েক গুন মুনাফা।
আর পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াত পাওয়ার যোগ্য হবেন। এছাড়া মাসিক পেনশনবাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অন্যদিকে, চলতি বছরির জুলাই বা তার পরবর্তী সময়ে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যোগদান করবেন, তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তারা সবাই ‘প্রত্যয়’ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। গত ২০ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন ইস্যু করেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ কর্তৃক ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাস করা হয়। বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) ওই বছরের ১৭ আগস্ট সকালে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই সবার জন্য সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত করা হয়।
উদ্বোধনের পর জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে এবং চারটি স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংকে টাকা দেয়া শুরু হয়।