কোটা সংস্কার আন্দোলন চালিয়ে গেলেও আলোচনার পথ ‘খোলা’ আছে, এই আন্দোলনে কেউ সহিংসতা করলে সেই দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (১৭ জুলাই) রাত পৌনে ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক টিমের পক্ষে ফেসবুকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেছেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়ে সরকারই উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে ফিরতে চায়। সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে। আমাদের আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনার পথও খোলা থাকবে। হামলার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ কর্মী ও দায়িত্বরত পুলিশদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে কোটার সংস্কার করতে হবে।
এতে কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোটা সংস্কারের যৌক্তিক ও ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-ছাত্রলীগ যৌথভাবে হামলা করে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ থাকলেও সরকার কোনো ধরনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। সরকার প্রথমে বিচার বিভাগকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সাথে কালক্ষেপণ ও দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে। পরবর্তীতে সরকারের নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে সহিংসভাবে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে হাজারের ওপর শিক্ষার্থী আহত এবং সাতজনের মতো শহীদ হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জোর করে বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে পুলিশ হলে হলে টিয়ারশেল, গ্রেনেড ও গুলি চালিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সোয়াট যৌথভাবে কফিন মিছিলে হামলা চালায়।
ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদির সঙ্গে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ কোনোভাবেই জড়িত নয় উল্লেখ করে এসবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’
উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চলমান আন্দোলনে কেউ সহিংসতা করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর দায়ভার নেবে না। আমরা সকলকে অনুরোধ করব যাতে আমাদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের প্রচেষ্টা না করে। কারণ, আমাদের এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবির আন্দোলন।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অভিভাবক, শিক্ষকরা এবং সর্বস্তরের নাগরিকদের আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।
বিজ্ঞপ্তিতে শাটডাউনে অফিস আদালত সব বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। সড়কপথ, রেলপথ অবরোধ থাকলেও অ্যাম্বুলেন্স, ইমার্জেন্সি পরিবহন ও গণমাধ্যম পরিবহন শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এতে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।