আজ ২৮ আগস্ট সোমবার বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক সুনীল ব্যানার্জির ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল সাতক্ষীরা শহরের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রত্যক্ষভাবে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন। বিসিএস পাস করেও ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেননি সুনীল ব্যানার্জি। এমন কী এলএলবি পাস করে স্বাধীন আইন পেশায় যোগ না দিয়ে সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার মাধ্যমে ঢাকায় প্রত্যক্ষভাবে সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। এরপর ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত তিনি তৎকালীন দৈনিক বাংলায় সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল দৈনিক জনকন্ঠ।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অনুসন্ধানী রির্পোট লিখে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে একুশে গ্রন্থ মেলায় সুনীল ব্যানার্জির লিখিত বই ‘সাংবাদিকতায় বিড়ম্বনা’ পাঠক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। অবিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নের সাথেও তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
সুনীল ব্যানার্জিকে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মরণোত্তর বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করেছে। এর আগে মুক্তিযুদ্ধে অমূল্য অবদানের জন্য তাকে ২০১০ খ্রিস্টাব্দে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মরনোত্তর স্বীকৃতি স্মারক প্রদান করা হয়। এছাড়া গত বছর সাতক্ষীরায় 'মুক্ত চিন্তার মঞ্চ' কর্তৃক আয়োজিত গুণীজন সংবর্ধনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সুনীল ব্যানার্জি (মরণোত্তর)-কে সম্মানসূচক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ আগষ্ট ভোররাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ নিজ বাস ভবনে তাঁর আকস্মিক মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। প্রয়াত সুনীল ব্যানার্জির স্ত্রী শিখা ব্যানার্জি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা এবং একমাত্র সন্তান সাংবাদিক শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ।
সুনীল ব্যানার্জির মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনার অনুরোধ জানানো হয়েছে।।