মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগ তুলে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজকে (২৬) বহিষ্কারের দাবি তুলেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের একাংশ। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বহিষ্কারের এ দাবি তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রমিজ খান মুন্না, সহ-সভাপতি নাজমুল খান, সহ-সভাপতি এস এম শাকিল হুসাইন, সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার কাজী, নাজমুল মাতব্বরসহ অনেকে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৩ আগস্ট সাঈদী ইস্যুতে ফরিদপুরের ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ। সেই যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে সালথা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শোক প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দেন। পরবর্তীতে তিনি তার ফেসবুক ওয়াল থেকে স্ট্যাটাসটি সরিয়েও নেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতির এ রকম সংগঠনের বিরোধী কর্মকাণ্ডে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগ বিতর্কিত হয়। এ ঘটনা উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান এবং সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহামেদকে প্রমাণসহ বিষয়টি জানানো হয়। পরবর্তীতে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে গত ২৩ আগস্ট ৯ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হলেও সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাসী নেতারা দায়িত্বে থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও জানান উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম।
তবে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজ এ অভিযোগকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবি করে বলেন, আমি ফেসবুকে সাঈদীকে নিয়ে কোনো পোস্ট দেইনি। এসব মিথ্যা ও বানোয়াট। সাঈদী মারা যাওয়ার ৫ দিন পর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে ছাত্রলীগের একটা অংশ আমার নামে ও আমার ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে। সেখানে সাঈদীকে নিয়ে পোস্ট দেন এবং স্কিনসর্ট রেখে আইডিটি ডিজেবল করে দেয়। পরে বিষয়টি আমি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তিনি দাবি করেন, কয়েকমাস আগে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায়কে নারীঘটিত একটি কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহ আমার ওপর হামলা চালালে তাকেও জেলা ছাত্রলীগ বহিষ্কার করে। এরপর থেকে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের নামে ও তার ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে একটি ফেক আইডি খুলে সাঈদীকে নিয়ে পোস্ট দেয়া হয়। পরে একটি পক্ষ স্কিন শর্ট রেখে আইডিটি ডিজেবল করা হয়েছে বলে জেনেছি। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ফিরোজ খান রাজ। ফিরোজ খান রাজের ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা উপজেলা) আসনের এমপি মহোদয়ও জানেন।