পিরোজপুর সদরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর আগেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। এ স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে এক ‘সাবেক ছাত্রদল নেতাকে’ অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে রোববার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির দপ্তরে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় এক ব্যক্তির অভিযোগ, মোটা অংকের ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি এ নিয়োগ বন্ধ করতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম মৃধা ৫ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মঠবাড়িয়া উপজেলার সাফা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি রাজনৈতিক রূপ বদলে সদর উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজারের মাধ্যমে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, নজরুল ইসলাম মৃধা গর্ব করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বলে বেড়ান তিনি কখনো আওয়ামীলীগে ভোট দেননি বা দেবেন না। তিনি প্রধান শিক্ষক হলে স্কুল বিএনপির আখড়া হবে। এ নিয়োগ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছেন অভিভাবকরা।
মন্তব্য জানতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম মৃধা দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে প্রথম নিজেকে প্রধান শিক্ষক পরিচয় দেন। প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে পাওয়ার আবেদন করেও কি পদ পদবি ব্যবহার করা যায় কি-না জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার আবেদন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক উদ্দেশ হাসিলে এ অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অপর এক ভদ্রলোক প্রতিষ্ঠানের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দলাদলীতে তিনি সভাপতি হতে পারেননি। তাই তিনি নানা জায়গায় এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ দিচ্ছেন। এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মেয়র মহোদয়। এর আগে ডিসিরা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযুক্ত কেউ সভাপতি হতে পারেন না।
তিনি আরো বলেন, অভিযোগে যখন আমাকে সাফা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রদল সভাপতি দাবি করা হয়েছে, তখন ওই কলেজ প্রতিষ্ঠিতই হয়নি। আমি মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার আমির হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার দায়িত্ব নিয়োগ কমিটি বা বোর্ডের। নিয়োগ কমিটিতেও আমি নেই। তাই নিয়োগ প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ আমার নেই। যে অভিযোগ করেছেন তিনি ভুল করেছেন। আমরা একাডেমিক সুপারভাইজাররা উপজেলার একাডেমিক বিষয়াদি দেখি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার বালা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। তিনি নিজেকে প্রধান শিক্ষক পরিচয় দিতে পারেন না।
নিয়োগ নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমরা জেনেছি। তবে, নিয়োগ কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নও হয়নি। মনে হচ্ছে, রাজনৈতিক কারণে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।