কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফুয়াদ হোসেন শাহদাতের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ইডেন কলেজের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেত্রী।
বৃহস্পতিবাত (২৭ জুন) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক শামসুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন সাবেক ওই ছাত্রলীগ নেত্রী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে হাজারীবাগ থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে তাদের পরিচয় এবং পরে বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। পরে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে তারা একসাথে কক্সবাজারে ঘুরতে যান। সেখানে মুসলিম রীতিতে কাজী ডেকে বিয়ে করেন তারা। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজারে একটি হোটেলে একসাথেই রাত্রিযাপন করেন তারা। সেখানে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২২ আগস্ট কক্সবাজারে আমাদের বিয়ে হয়েছে; কিন্তু ছাত্র রাজনীতির ক্ষতি হবে বুঝিয়ে সে আমায় রেজিস্ট্রি করেনি।
তিনি আরও বলেন, ফুয়াদ এবং তিনি একই সাথে বাসা নিয়ে থাকতাম। সংসারও করেছি। আমি রেজিস্ট্রির কথা বললে আমায় কাউন্সিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলতো। কাউন্সিলের পর যখন আমি তার কাছে সামাজিক স্বীকৃতি চাইলাম, সে বিয়ের কথা অস্বীকার করে এবং আমার নামে নানান কথা ছড়াতে থাকে। এমনকি আমার নামে মামলাও করে।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব রাজিব জানান, ওই নারীকে বিয়ের আশ্বাসে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে ফুয়াদ। বৃহস্পতিবার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশটসহ ওই নারীর কাছে থাকা সকল প্রমাণ আদালতে জমা দেন তারা। পরে আদালত সবকিছু পর্যালোচনা করে হাজারীবাগ থানাকে মামলা রুজু করতে নির্দেশ দেন।
এমন অভিযোগের বিষয়ে ফুয়াদ হোসেন সময় সংবাদকে জানান, ওই নারীর প্রতারণার বিরুদ্ধে তিনি আগেই প্রতারণা মামলা করেছেন। তাকে ফাঁসানোর জন্যই এসব করছে।
এর আগে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এই নারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ফুয়াদ। আদালত মামলাটির এজাহার গ্রহণ করে এ মামলার আসামি ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এ নেত্রীকে ৩০ জুন আদালতে উপস্থিত হতে সমন জারি করেন।
ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত সর্বশেষ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এর আগে ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীও ছিলেন এই নেতা।