ছয় মাস মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরে আসা ধনিয়া বীজ রোপণ করা হয়েছে সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) ক্যাম্পাসে। গতকাল বুধবার সকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বীজগুলো রোপণ করেন। তার আগে মহাকাশের জীববিজ্ঞান গবেষণার অংশ হিসেবে নেওয়া এশিয়ান হার্বস ইন স্পেস প্রকল্পের বীজগুলো গ্রহণ করেন তিনি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন জাপানের কিবো মডিউলে ছয় মাস থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে পৃথিবীতে ফিরে আসে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো বীজগুলো। ওই বীজগুলো পাঠানোর সময় একই জাতের কিছু বীজ এনআইবিতে রাখা হয়েছিল। এখন মহাকাশ-ফেরত বীজ ও পৃথিবীতে সংরক্ষিত বীজের অঙ্কুরোদগম, বৃদ্ধি, স্বাদের তুলনামূলক পরীক্ষা করে দেখা হবে। তবে বীজগুলোর মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পেতে আরও দুই-তিন সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন হবে।
বীজ রোপণের সময় ইয়াফেস ওসমান বলেন, এশিয়ান হার্বস ইন স্পেস প্রকল্পটিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত গবেষণার সুযোগ নিঃসন্দেহে এনআইবির চলমান গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমরা চাই আরও এমন গবেষণা করা হোক।’
এনআইবি মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) এবং জাপানি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (জাক্সা) যৌথ উদ্যোগ ছিল এটি। তিনি জানান, বাংলাদেশের ধনিয়া বীজ দেশের প্রথম মহাকাশচারী হিসেবে এখন ইতিহাসের অংশ । গত বছরের ৭ মার্চ মহাকাশে পৌঁছেছিল বীজগুলো। হাইড্রোপনিক সিস্টেম ও আর্টিফিশিয়াল সানলাইট ব্যবহার করেই সেখানে ছয় মাস বীজগুলো রাখা হয়েছিল।
এনআইবি মহাপরিচালক বলেন, বীজ থেকে পাওয়া তথ্য পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব বিস্তার এবং ভবিষ্যতে মহাকাশেও ফসল ফলানোর সম্ভাবনার পাশাপাশি না জানা অনেক প্রশ্নের উত্তর এনে দিতে পারে। এই গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী ও গবেষকরা ভবিষ্যতে মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণায় অবদান রাখতে পারবেন।
মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত এ গবেষণায় বাংলাদেশ থেকে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) স্পেস সিস্টেম ল্যাবরেটরির প্রকৌশলী মিজানুল হক চৌধুরী। গবেষণা কার্যক্রমটি এনআইবির মহাপরিচালকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কেশব চন্দ্র দাস, মুসলিমা খাতুন ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কর্র্তৃক পরিচালিত হচ্ছে।