দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: নোবেল বিজয়ী কানাডিয়ান লেখক অ্যালিস মুনরো (৯২) মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাতে দেশটির অন্টারিওর প্রদেশে পোর্ট হোপে একটি কেয়ার হোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। লেখকের পরিবার ও তার প্রকাশক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।
৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার ছোটগল্প লিখেছেন তিনি। তার লেখার উপজীব্য কানাডার গ্রামীণ জীবন। তার গল্পে অন্তর্দৃষ্টির জন্য তাকে রাশিয়ান লেখক আন্তন চেখভের সঙ্গে তুলনা করেন সাহিত্যবোদ্ধারা।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পান অ্যালিস মুনরো। তখন তার বয়স ছিল ৮২ বছর। ওই সময় মন্তব্য করেছিলেন, ‘জানতাম তালিকায় আমার নাম আছে। কিন্তু কখনো ভাবিনি যে আমিই জিতব।’ নোবেল কমিটি তাকে ‘সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার’ বলে অভিহিত করে। এর আগে নোবেলের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে। দ্য বেয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন’ বইয়ের জন্য তিনি ওই পুরস্কার পান। তার এ বই অবলম্বনে পরিচালক সারাহ পলি তৈরি করেছেন সিনেমা অ্যাওয়ে ফ্রম হার।
অ্যালিস মুনরো লেখালেখির প্রথম সাফল্য আসে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে। তার ছোট গল্পের বই ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’র জন্য পান কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান, গভর্নর জেনারেল পুরস্কার।
মুনরোর জন্ম ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাই, কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যাম এলাকায়। সেখানকার গ্রাম্য ও শান্ত পরিবেশেই তার বেড়ে ওঠা। বাবা ছিলেন খামার মালিক, মা স্কুলশিক্ষক। মাত্র ১১ বছর বয়সেই মুনরো ঠিক করে ফেলেন বড হয়ে একজন লেখকই হবেন। সে মতোই এগিয়েছে সবকিছু। নিজের পেশা নিয়ে পরবর্তী সময়ে
মুনরোর প্রথম গল্প ‘দ্য ডাইমেনশন অব আ শ্যাডো’ প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালে। তখন তিনি ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সেখানেই পরিচয় হয় জেমস মুনরোর সঙ্গে। তারা বিয়ে করেন ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের। এরপর তিনি সংসার করেছেন, চালিয়ে গেছেন লেখালেখি। জেমসের সঙ্গে তার দুই দশকের সংসার ভেঙে যায় ১৯৭২ সালে। এর আগে তিন কন্যাসন্তানের মা হন তিনি। চার বছর পর আবার বিয়ে করেন জেরাল্ড ফ্রেমলিনকে।
মুনরোর প্রকাশিত ছোটগল্পের সংকলনের মধ্যে আছে ‘লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইম্যান’ (১৯৭১), ‘সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ’ (১৯৭৪), ‘দ্য মুনস অব জুপিটার’ (১৯৮২) ‘ফ্রেন্ড অব মাই ইয়োথ’ (১৯৯০), ‘ওপেন সিক্রেটস’ (১৯৯৪), ‘দ্য লাভ অব আ গুড উইম্যান’ (১৯৯৮), ‘হেটশিপ ফ্রেন্সশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারিজ’ (২০০১), ‘রানঅ্যাওয়ে’ (২০০৪), ‘টু মাচ হ্যাপিনেস’ (২০০৯) ও ‘ডিয়ার লাইফ’ (২০১২)।