ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকা মহানগরীতে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এসব ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে। মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা ও আহত করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। হামলার রসদ সরবরাহ করার তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে কে কীভাবে আগুন লাগায় এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় জড়িত অনেকের নামপরিচয় পাওয়া গেছে। সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
মহাখালী সেতু ভবনে ঢুকে লুটপাটকারী দুজনকে গ্রেফতারসহ ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতারের পর এসব কথা বলেন তিনি। গ্রেফতার দুই মালামাল লুটপাটকারী হলেন- জজ মিয়া, মো. রাকিব (২২)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মহাখালী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মহাখালীর সেতু ভবনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কিছু নেতা টাকা পয়সা দিয়ে সাততলা বস্তি এবং কুড়িল বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সংগ্রহ করেছে। এরপর মহাখালীতে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল শুরু করে। পরবর্তী সময়ে তারা সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়। আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তারা কীভাবে আগুন লাগায় এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম পরিচয় পেয়েছি।
হারুন বলেন, গ্রেফতার দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত বিএনপি ও জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- ঢাকা উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিএনপি নেতা বরকতুল্লা বুলুর ছেলে সানিয়াত বুলু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপিসহ সভাপতি মোশারফ হোসেন খোকন ওরফে কাইল্লা খোকন, কৃষক দলের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন, ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান দয়াল, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল উদ্দিন ও ভাটারা থানার আমির রেজাউল করিম।
বিএনপি-জামায়াত সরকারি স্থাপনাকে কেনো টার্গেট করছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ঢাকা বিশ্বববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছে। পুলিশকে হত্যা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ডাটা সেন্টার, বিটিভি, আমাদের গর্বের মেট্রোরেলে হামলা করেছে। সব জায়গায় গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা ৭১ সালের মতো পুরোনো দিনে ফিরে গেছে। তারা চেয়েছিল সরকার উৎখাত করতে। দেশে কোটা আন্দোলন চলছে আর তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করেছে। আমরা সবার নামপরিচয় পেয়েছি। তারা কীভাবে কার মাধ্যমে গান পাউডার ও অস্ত্র এনেছে বের করা হবে।
তারা পুলিশ মারা ও আগুন দেওয়ার জন্য টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কে নির্দেশনা দিয়েছে, কারা অর্থায়ন করেছে সব বের করা হবে বলেও জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।