প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৪ হাজার ৫টি বিভিন্ন পিলারে একসময় পাকিস্তানের সংক্ষিপ্ত পাক লেখা ছিল যেটাকে বিজিবি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ও বিডি নাম লিখেছে। এটা কেন দীর্ঘদিন লাগল তা আমি জানি না তবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু এখন সেটা আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে করা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস- ২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাজধানীর বিজিবি সদর দপ্তরের বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বিজিবি কর্মকর্তাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। বিজিবিকে বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে আমাদের সংবিধান সংশোধন করে সীমানা ঠিক করে দিয়ে গিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো তখনও ভারতের সঙ্গে আমাদের ছিটমহল বিনিময় হয়নি। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর যারা একের পর এক ক্ষমতায় এসেছিল প্রায় ২১ বছর তারা কখনও আমাদের এই সীমান্ত রেখা সুনির্দিষ্ট করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর আমরা এই উদ্যোগ নিই। দ্বিতীয়বার আমরা ক্ষমতায় আসলে আমাদের উদ্যোগে ভারতের পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে আইন পাস করে সীমান্তরেখা সুনিদির্ষ্ট করা হয়েছে। এটা আমাদের বিরাট অর্জন।
বিজিবির উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ; মাদক, নারী ও শিশু পাচার আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনসহ সীমান্তবর্তী জনগণের জানমাল রক্ষা আপনাদের দায়িত্ব। আপনারা এসব দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। আমরা অত্যন্ত উৎসবমুখরভাবে ছিটমহল বিনিময় করেছি যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে আমাদের বর্ডার গার্ড অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সব ধরনের দেখাশোনা, আশ্রয়, রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ও বিভিন্ন কাজে আমাদের বর্ডার গার্ড দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিচ্ছিদ্র নজরদারি ও অন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ মোকাবিলা ও ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভিলেন্স ও ট্যাক্টিক্যাল স্মার্ট সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ও দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রথম পর্বে পার্বত্য সীমান্ত এলাকায় ৩১৭ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে চারটি ব্যাটালিয়ান ও সুন্দরবন এলাকায় দুটি ভাসমান বিওপিসহ মোট ৬২টি বিওপি সৃজন করা হয়েছে। এতে ৫৩৯ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তের মধ্যে চারশ দুই সীমান্ত নজরদারিতে আনা সম্ভব হয়েছে।