সুশাসনের লক্ষ্যে গঠিত অন্তবর্তী সরকারকে সবরকম সহযোগিতা দেবে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) ও বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদ (বিপিসি)। ঢাকার মিরপুর অস্থায়ী কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকালে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
বাকশিস সভাপতি অধ্যক্ষ ইসহাক হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান।
সভায় শিক্ষক নেতারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লবের মাধ্যমে ৫ আগস্ট স্বৈরশাসনের পতনের পর দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ায় শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান হয়েছে।
তবে নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ও সমাজ সংস্কারক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বাংলাদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা।
ভেঙ্গে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও বিধ্বস্ত অর্থনীতি স্বাভাবিক করার দাবি জানানো হয় সভা থেকে।
সরকার প্রভাবিত পক্ষপাতমূলক বিচার ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার অনুরোধ রাখা হয়। দলীয় প্রশাসন ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি থেকে জাতিকে রক্ষায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষক নেতারা।
শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, ভোটাধিকার বিহীন নির্বাচনে যারা জড়িত ও সহায়তাকারি তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলামসহ নানাভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া শিক্ষা ব্যবস্থা রক্ষার আবেদন জানান তারা।
গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করে রাখার সমালোচনা করে তারা বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ফিরে আসবে বলে তারা আশাবাদী।
আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ প্রত্যাশা তাদের।
শিক্ষক নেতারা বলেন, সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র চাঁদাবাজিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। দেশ ও জাতিকে সুশাসনের মাধ্যমে চরম বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করার লড়াইয়ে শিক্ষক সমাজ পাশে থাকবে।
সভা থেকে ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রকৃত শহীদ ও আহত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলোচনা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইউসুফ সুমন, ইলিম মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন, আনোয়ার হোসেন মন্ডল, হোসেন জাহান, রেজাউল হক, কানিজ ফাতেমা, মোঃ হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সভায় শুরুতে ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে যাঁদের আত্মত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে স্বৈরতন্ত্রের অবসান হয়েছে, সেসব জাতীয় বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।