টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার দাপনাজোর গ্রামের মার্থা লিন্ডস্ট্রম নুরজাহান বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানছুর রহমান এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল লাবুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানাবিধ নেতিবাচক গুঞ্জন। কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মানাই যেনো তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, এমনটাই বলছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি একত্রে মিলেই বিদ্যালয়ের সব ধরনের অনিয়ম করে চলছেন বলে মন্তব্য করেছেন অভিভাবকেরা।
গত ২৫ জুন মার্থা লিন্ডস্ট্রম নুরজাহান বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নির্বাচিত পাঁচজন অভিভাবক সদস্য প্রধান শিক্ষক মানছুর রহমান এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল লাবুর বিরুদ্ধে নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, সভাপতি লাবু এবং প্রধান শিক্ষকের নীল নক্সা হচ্ছে, অভিভাবকরা এবং ছাত্রীরা যতই অসন্তুষ্ট হোক না কেনো এবং যেভাবেই তারা ভোট দেন না কেনো, স্কুল কমিটির নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই থাকবে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা বলে বেড়াচ্ছেন যে, ভোটে হারতে পারি কিন্তু ভোটের মাধ্যমে আমাদেরকে কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না অর্থাৎ সভাপতির পদ তাদেরই থাকবে এবং পূর্বের ন্যায় অনিয়মতান্ত্রিক আর্থিক ও অন্যান্য কার্যক্রম তারা চালিয়ে যেতে পারবেন। তাদের হিসাবে তিনজন তাবেদার শিক্ষক সদস্য এবং একজন করে দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসহ মোট ৫টি ভোট তাদের পক্ষেই থাকবে। আমরা ৫ জন নির্বাচিত সদস্য ভোট দেয়ার অধিকারী সেইক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য হলো ‘টাইব্রেকিং’ এর নিয়ম মোতাবেক। প্রধান শিক্ষক অথবা প্রিসাইডিং অফিসারের ডিসাইডিং ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রার্থীই সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হবে। আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মনে করি এই নীল নক্সা বাস্তবায়িত হলে সকল অভিভাবকের ভোট অর্থহীন হয়ে পড়বে।
অভিযোগ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. আহসান হাবীব মনসুর বলেন, ভোটার তালিকায় আমার নাম না থাকা অবশ্যই প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান সভাপতির ষড়যন্ত্রের অংশ। আমি শিক্ষক প্রতিনিধিদের আহ্বান জানাবো যেকোনো দলভুক্ত না হয়ে বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত যেনো নেয়।
অভিযোগ অনুসারে সভাপতি লাবু আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক এবং কতিপয় নিজ পক্ষের শিক্ষকদের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি করে তাদেরকে এই ষড়যন্ত্রের অংশিদার করে ফেলেছে । এই বিষয়ে নির্বাচনে নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধি সুজন বর্তমান সভাপতির অনেক গুণগান করে বলেন, এগুলো উনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। আপনি কি আসলেই সভাপতির থেকে অতিরিক্ত লাভবান হচ্ছেন বা হবেন কি না জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
অভিযোগ নাকচ করে প্রধান শিক্ষক বলেন, বিধি অনুযায়ী নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সম্পর্কে নোটিশ দেয়া হয়, ক্লাসে ক্লাসে নোটিশ জানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের চিঠি দিয়ে বা ফোন করে জানানোর কোনো নিয়ম বিধিতে নেই। এ বিষয়ে বর্তমান সভাপতি বলেন, নিয়ম মেনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।
অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মতিউর রহমান খান বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। আইন অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে সাবেক সভাপতি ড. আহসান হাবীব মনসুর মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি, যার কারণে নির্বাচনে প্রতিষ্ঠাতা ভোটার হতে পারেননি। অভিভাবকদের অভিযোগ যাই থাকুক আইনের বাইরে কিছু হবে না।