অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল। ইতোমধ্যে তার বাগদান সম্পন্ন হয়েছে। বিবাহ অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হবে ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ের নির্দেশ দেয়া সেই প্রধান শিক্ষককে।
জানা যায়, গোপালপুর পালপাড়ার বাসিন্দা রতন লাল পালের ছেলে গোপালপুর সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রনি প্রতাপ পালের বাগদান সম্পন্ন হয়েছে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর)। আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিয়ের বাকি কাজ সম্পন্ন হবে।
গত জুলাই মাসে ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে বিয়ে করতে রনি প্রতাপ পালকে নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ে না করলে চাকরি যাবে শিক্ষকের
নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেয়ায় ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি তদন্ত চলমান রয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে ছাত্র, ছাত্রী, অভিভাবক, সাবেক শিক্ষকরা ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন।
নোটিশ দেয়ার আগে থেকেই পরিবারের পক্ষ থেকে রনির জন্য পাত্রী খোঁজা হচ্ছিল। অবশেষে ২২ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল কালিহাতি উপজেলার মগড়া এলাকার সত্য পালের মেয়ে স্বর্ণা পালের সঙ্গে আশীর্বাদ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। স্বর্ণা অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিয়ের বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সহকারী শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে যোগ দেন রনি প্রতাপ পাল। চলতি বছরের ২৬ জুলাই রনিকে ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে বিয়ে করতে নোটিশ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ স্থানীয়দের মাঝে হইচই শুরু হয়।
নোটিশে বলা হয়, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের পর আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিবাহ করার জন্য। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিবাহ করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে পাক্কা নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
নোটিশটি পাওয়ার দুইদিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্রপাত্রী বাছাইয়ে গাত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করে না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকেরা আমাকে বিবাহ করাবেন বলে জানিয়েছেন।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এই বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছেন। আর বিয়ের বিষয়ে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন।