কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীর্ষ নেতা এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের চার শীর্ষ নেতার বিরোধের আপাতত অবসান ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একসঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল সেলফি পোস্ট করেছেন এই আট নেতা।
বিরোধের বিষয়টিকে এখন তারা ‘ভুল-বোঝাবুঝি’ বলছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ভাষ্য, কিছু অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে। সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না পেয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রাপ্য সম্মান না দেওয়া ও রাজনৈতিক সৌজন্য না দেখানোসহ নানা অভিযোগ তোলেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার শীর্ষ নেতারা। দুই সপ্তাহ ধরে কেন্দ্রের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।
বিরোধের জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা কেন্দ্রের অধীন থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ শাখার নিয়ন্ত্রণ, হল কমিটিতে কেন্দ্রকে ‘ভাগ’ না দেওয়াসহ নানা বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বিরোধের কারণে মহানগরের শীর্ষ নেতারাও সম্প্রতি কেন্দ্রের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন।
এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক সাত কলেজের ‘একাডেমিক সংকট নিরসনে’ কলেজগুলোর একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে টিএসসি মিলনায়তনে মতবিনিময় করেন। এরপর গত তিন দিন সাত কলেজের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে তাদের ইউনিটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হন। ঘোষণা দেন তারা কেন্দ্রের সঙ্গেই থাকবেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিরোধের ফলে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এই বিরোধ চলার মধ্যেই আজ শুক্রবার ভোরে নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একযোগে হাস্যোজ্জ্বল সেলফি পোস্ট করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান (সৈকত), ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি রাজিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু।
সেলফির বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ ওয়ালী আসিফ বলেন, ‘আমরা বলতে চাই যে আমাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হলো। কিছু ভুল-বোঝাবুঝি ও মনোমালিন্যের অবসান ঘটল। আমাদের সম্পর্ক আদর্শ ও প্রগতির, এই সম্পর্ক শিক্ষা ও শান্তির। এই সম্পর্কের দৃঢ়তা নিয়ে কারও কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।’