মহাদেবপুরে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সামগ্রী ও অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে দখল করায় খেলাধুলা ও বিনোদন বঞ্চিত হচ্ছে পাঁচ শতাধিক কোমলমতি শিশু। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে শিবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এসব নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে এক বছর ধরে। সেই থেকে এই বিদ্যালয়ের পাঁচশ কোমলমতি শিশুর খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও বন্ধ হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শিবগঞ্জ হাট। শিশুসহ এলাকার বয়স্ক মানুষেরা প্রাতঃভ্রমণ ও বৈকালিক বিনোদনের জন্য আত্রাই নদীর তীরে এ মাঠটি ব্যবহার করত।
শিশুদের অভিভাবকেরা এ নিয়ে নানা কথা বললেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের তৎপরতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এ মাঠটি দখলে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি তারা। মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মাঠটিতে বালু, ইট, খোয়া আর বিভিন্ন রকম সারি সারি যানবাহন।
এখানে ঠিকাদারের লোকজন কয়েকটি অস্থায়ী আধাপাকা স্থাপনাও নির্মাণ করেছেন। ঠিকাদারের নির্মিত ঘরে পাওয়া গেল একজন অ্যাটেনডেন্টকে। ঠিকাদারের ফোন নম্বর চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন। তিনি তার নিজের ফোন থেকে সাজ্জাদ কাদির নামে একজনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট অফিসার বলে জানান। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনিও কথা বলতে অস্বীকার করেন। পরে অ্যাটেনডেন্ট প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আখতারুজ্জামান তারেকের মোবাইল ফোনে রিং দিয়ে কথা বলান।
মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে পরে দেখা করবেন বলে জানান। বিষয়টি জানতে শিবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা জানান, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এলাকার বড় বড় নেতারা ঠিকাদারকে মাঠটি ব্যবহার করতে দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাফিয়া আকতার অপু জানান, বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখা খুবই দুঃখজনক। ঠিকাদার এ ব্যাপারে তাদের কোনো অনুমতি নেননি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিলাইবল বিল্ডার্স। সড়ক ও জনপথ বিভাগ নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পত্নীতলা উপবিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ওই মাঠটিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সামগ্রী রেখে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় হাট কমিটি ও নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে মাঠটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কি না তা তার জানা নেই।