নড়াইল লোহাগড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এক শিক্ষার্থী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতীকী সাজ নিয়েছিল। এ ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. তসলিম উদ্দিনকে শো-কজ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া শো-কজের চিঠিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। খালেদা জিয়া সাজ নেওয়া শিক্ষার্থীর ছবিও একইসঙ্গে ভাইরাল হয়।
বিষয়টি নড়াইলে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লোহাগড়া উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় মোল্যার মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকালে এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুলের পাশাপাশি দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলও অংশ নেয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মেয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বেগম রোকেয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি, সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, নারী ফুটবলার-ক্রিকেটারসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নারীর প্রতীকী সাজে ডিসপ্লে করে।
এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এক শিক্ষার্থী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাজ নেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী গত ২৭ মার্চ দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করেন।
নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে লেখা হয়, দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ডিসপ্লেটি মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ নিয়ে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় উপজেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এতে প্রধান শিক্ষক মো. তসলিম উদ্দিনের কাছে ভিন্নধর্মী ডিসপ্লে প্রদর্শনের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তাকে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে লিখিত বক্তব্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত ডিসপ্লে প্রদর্শনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
নির্দিষ্ট নেত্রীর কারণে নয়, স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি।চিঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে তসলিম উদ্দিন বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন পর্ষদের উপজেলা মিটিংয়ে আমি অনুপস্থিত ছিলাম। সমাজে নারীদের ভূমিকা বোঝাতে এমন আয়োজন করেছিলাম আমরা। এটা স্বাধীনতা দিবস ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত কিনা বিষয়টা এভাবে ভেবে দেখিনি। আমি চিঠির ব্যাখ্যায় দুঃখ প্রকাশ করে পরবর্তীতে অসঙ্গতিপূর্ণ এ ধরনের কোনো কার্যকলাপ করবো না বলে অঙ্গীকার করে চিঠির জবাব দিয়েছি।