গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল নায়েবুন্নেছা ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ও কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের’ অভিযোগ উঠেছে। ২৯ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যে চারটি পদের নিয়োগের অনুমোদন দিতে বিদ্যালয়ের সভাপতিকে হুমকি-ধমকি ও চাপ দিচ্ছেন ওই আর্থিক সুবিধাভোগীরা।
এ বিষয় ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান রিপন।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার রাতইল নায়েবুন্নেছা ইনস্টিটিউশনের অফিস সহায়ক, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, আয়া, পরিছন্নতাকর্মীর শূন্যপদে নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রার্থীর কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করে গত ১১.০৯.২২ তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ শহরের বীণাপানি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করলেও ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময় অযোগ্য প্রার্থীদের পরীক্ষা পাস করানো হয়। এসব প্রার্থীর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বজনরাও রয়েছেন। নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রায় ২৯ লাখ টাকার নিয়োগবাণিজ্য করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম ও বিদ্যালয়ের কতিপয় সদস্যরা। নিয়োগের অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক ও কয়েকজন সদস্য তোড়জোড় করায় সভাপতি অনিয়মের বিষয়টি বুঝতে পারেন। বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সভাপতি পরীক্ষার ফল প্রত্যাহার করে পুনরায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে নিয়োগের দাবি জানালে প্রধান শিক্ষক তাকে অনাস্থার হুমকি দেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি জোর করে সভাপতিকে রেজুলেশনে সই করতে বলা হয়। সই না করায় প্রধান শিক্ষক ও কতিপয় সদস্য তাকে নানাভাবে হুমকি দেন। এ ঘটনার পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন ওই সভাপতি।
এদিকে, স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবে নিয়োগ বাণিজ্য হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির মান ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। প্রতিক্রিয়া এ নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম এসব অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নিয়োগ বিধি মেনে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি বলেন, ‘পরীক্ষার দিন প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে চুক্তি অনুযায়ী প্রার্থীদের পরীক্ষায় নির্বাচিত করেন। আমি স্কুলে যাওয়ার পর তিনি আমাকে জোর করে রেজুলেশন খাতায় সই করতে বলেন। আমি তার আচরণে ক্ষুব্ধ হই এবং প্রতিবাদ জানিয়ে চলে আসি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমি কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে শতভাগ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এখানে কোন ধরনের অনিয়ম হয়নি।’