স্কুলে বন্দুকধারীর হানা, জাপটে ধরলেন পুলিশ কর্মকর্তা - দৈনিকশিক্ষা

স্কুলে বন্দুকধারীর হানা, জাপটে ধরলেন পুলিশ কর্মকর্তা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় নিজের অফিসে বসে ছিলেন মালদহের পুলিশ কর্মকর্তা (ডিএসপি) আজহারউদ্দিন খান।বুধবার দুপুরে হঠাৎ খবর আসে মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলে এক বন্দুকধারী ঢুকে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই চলে যান ঘটনাস্থলে। পুলিশ তখন স্কুল ঘিরে ফেলেছে।

কিন্তু কেউই এগিয়ে যেতে পারছেন না। পুলিশ দেখলেই রেগে যাচ্ছেন বন্দুকধারী দেব বল্লভ। সেসময় আচমকা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন্দুকধারীর ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন আজহারউদ্দিন।

বন্দুক ধরা হাতটাকে ওপরে করে দিলেও কম শক্তি দেখায়নি বন্দুকধারী। তবে ততক্ষণে অন্য পুলিশকর্মীরাও আজহারউদ্দিনকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন।

গোটা ঘটনার কথা জানার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যাণার্জি বলেছেন, ‘পুলিশ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ভালো কাজ করেছে।’ যে কৃতিত্বের অনেকটাই প্রাপ্য আজহারউদ্দিনের।

হাতে অল্প চোট পেলেও বন্দুকবাজকে ধরতে পেরে খুশি আজহারউদ্দিন।তাকে নিয়ে গর্ব করছেন পুলিশ কর্মকর্তারাও। তবে সেই সময়ের কথা মনে করে সাহসী আজহারউদ্দিন জানালেন, শিক্ষার্থীদের কী হবে ভেবে তখন তার মাথা কাজ করেনি। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে নিয়েছিলেন।

তার বাড়ি কলকাতার পার্ক সার্কাসে। সিটি কলেজে শারীরবিদ্যা (ফিজিওলজি) নিয়ে পড়াশোনা। তার পরে পুলিশে চাকরি। বছর আড়াই আগে চাকরি সূত্রেই মালদহে যাওয়া। যে স্কুলে হামলা হয়েছে সেটি ডিএসপি হিসাবে তারই এলাকার মধ্যেই পড়ে।

কেমন করে ধরলেন? বন্দুকধারীর ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়ে নিজের জীবনের ঝুঁকির কথা মনে হয়নি? আজহারউদ্দিনের কথায়, ‘ওখানে গিয়ে দেখি ছাত্রদের মুখ শুকিয়ে গিয়েছে। আমি এখনও বাবা হইনি। কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছিল, ওরা আমার সন্তানের মতো। দেখেশুনে মাথা কাজ করছিল না। মাথা ঠান্ডা করে পরিকল্পনা করি।

আজহারউদ্দিন বলেন, গিয়ে দেখি, পুলিশকে দেখলেই বন্দুকধারী রেগে যাচ্ছেন। তাই আমি স্কুলের পিছন দিকে চলে যাই। পুলিশের পোশাকে কিছু করা যাবে না বুঝে স্থানীয় এক জনের কাছ থেকে টিশার্ট চেয়ে নিই। জামার বদলে টিশার্ট পরে জুতো খুলে হাওয়াই চটি পায়ে গলাই। বেল্টও খুলে ফেলি।

আগেই দেখেছিলাম, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ভয় পাচ্ছেন না বন্দুকধারী। ছবি তুলতে দিচ্ছেন, কথাও বলছেন। আমিও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে মিশে যাই। উনি বুঝতে পারেননি, আমি পুলিশ। তার পরে মুহূর্তের সিদ্ধান্তেই ঝাঁপিয়ে পড়ি।

সেই সময়ে তো গুলি চালিয়ে দিতে পারতেন বন্দুকধারী! আজহারউদ্দিন বলেন, সেই চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু আমি আগেই বন্দুক ধরা হাতটা ওপরের দিকে করে দিই। তার পরে সর্বশক্তি দিয়ে মাটিতে ফেলি। আমাকে ব্যাকআপ দেওয়ার কথা আগেই পুলিশকর্মীদের বলে রেখেছিলাম। সেই মতো সবাই চলে আসেন। সবাই মিলে ধরে ফেলি।

এর পরে ওই ব্যক্তিকে বাইরে নিয়ে এলে দেখা যায় তার কাছে আরও একটি বন্দুক এবং ছুরি ছিল। সঙ্গে পেট্রল বোমাও।

তিনি আরও বলেন, বড় বিপদ হতে পারত। বন্দুকধারীকে ধরে ফেলার পরেই শিক্ষার্থীদের বাইরে বের করে আনতে উদ্যোগী হই।কারণ, তখন ওদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ।

জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার জন্য সবাই তার প্রশংসা করছেন। তবে আজহারউদ্দিন বলছেন, ‘আমি আমার কর্তব্য করেছি।’

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036060810089111